বেনাপোল প্রতিনিধি
বেনাপোল কাস্টমসে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), যা গত অর্থবছরের তুলনায় ৮০৮ কোটি টাকা বেশি। বন্দর ও কাস্টমসে শিগগির প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপন ও সক্ষমতা বাড়ানো না হলে গত অর্থবছরগুলোর মতো চলতি অর্থবছরেও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, দেশে সরকার অনুমোদিত ২৩টি স্থলবন্দরের মধ্যে সচল রয়েছে ১২টি। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় আর বেশি রাজস্ব আদায় হয় এই বেনাপোল স্থলবন্দরে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সক্ষমতা না থাকায় বন্দরটি ১১ বছরে কখনো রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি।
গত অর্থবছরে বন্দরটির রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৫ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। আদায় হয়েছিল ৪ হাজার ৫৯৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা। ফলে ঘাটতি ছিল ৫৫৯ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য যেহেতু ৮০৮ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে, তাই এটা অর্জনে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমসবিষয়ক সম্পাদক মো. মেহেরুল্লা বলেন, বন্দরে জায়গার অভাবে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় দিনের পর দিন ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকছে। রেলে পণ্য আমদানিতেও একই অবস্থা। এতে আমদানি খরচ বাড়ছে।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, বেনাপোল বন্দরে আমদানি পণ্য রক্ষণাবেক্ষণে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন পণ্য রাখার জায়গার দরকার হলেও আছে মাত্র ৪৫ হাজার মেট্রিক টনের। জায়গা বাড়ানো না হলে রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব নয়।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ ট্রাক পণ্য আমদানির চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ভারত অংশে কালিতলা পার্কিংয়ে দীর্ঘদিন ট্রাক আটকে থাকা এবং বেনাপোল বন্দরে জায়গা সংকটের কারণে দিনে ৩৫০ ট্রাকের বেশি পণ্য আমদানি সম্ভব হয় না। ভারী পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে বন্দরে পর্যাপ্ত ক্রেন, ফর্ক ক্লিপ না থাকায় ব্যবসায়ীরা চাহিদামতো পণ্য খালাস নিতে পারেন না। কাস্টমসে পণ্য পরীক্ষণের জন্য বিএসটিআই বা বিএসআইআরের শাখা না থাকায় বন্দরের বাইরে থেকে পণ্য পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। খরচ করতে হয় ৫ গুণের বেশি অর্থ। গত বছর এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমেছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন।
তবে আশার বাণী শুনিয়েছেন বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার। তিনি বলেন, বাণিজ্যিক সুবিধা বাড়াতে বন্দরের উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। দুই বছরের মধ্যে এসব শেষ হবে। তখন এসব সমস্যা আর থাকবে না।