Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

চরের কৃষকদের বিপদ বাড়ল

রিমন রহমান, রাজশাহী

চরের কৃষকদের বিপদ বাড়ল

আগে নদীর এপারে যখন প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ছিল ৮০ টাকা, তখন পদ্মার ওপারে ১০০। আর এখন নদীর এপারেই দাম ১১৪ টাকা, ওপারে ১৩০ টাকা। সব সময় এভাবে বাড়তি দামেই তেল কিনে চাষাবাদ করতে হয় চরাঞ্চলের কৃষককে। বাড়তি খরচে চাষাবাদ করলেও তাঁরা ফসলের দাম পান নদীর এপারের তুলনায় কম।

গত শুক্রবার রাত ১২টা থেকে ডিজেলের লিটারপ্রতি মূল্য এক লাফে ৩৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে যখন এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়, তখন চরের অধিকাংশ কৃষকই ঘুমিয়ে ছিলেন। শনিবার সকালে হঠাৎ এ খবর শোনার পর তাঁদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। বাড়তি খরচের চিন্তায় তাঁরা হতাশায় ভুগছেন। সারের মূল্যবৃদ্ধির পরপরই সেচ খরচ বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা সংকটে পড়েছেন।

রাজশাহীর মাঠে মাঠে সাধারণত বিদ্যুচ্চালিত গভীর নলকূপের মাধ্যমেই সিংহভাগ কৃষক জমিতে সেচ দেন। এপারের অল্পসংখ্যক কৃষক সেচের জন্য ডিজেলচালিত শ্যালো ইঞ্জিনের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু রাজশাহীর পদ্মা নদীর ওপারের চরগুলোতে চাষাবাদের প্রায় পুরোটাই হয় শ্যালো ইঞ্জিনের সেচে। চরের সামান্য কিছু জমি সৌরবিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। এই অবস্থায় তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে আরও বিপদে পড়েছেন চরের কৃষক। চাষাবাদের কী হবে, এ নিয়েই তাঁদের এখন দুশ্চিন্তা।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নটি নদীর ওপারে। এই চরে চাষাবাদে সেচ খরচের হিসাবটা দিলেন আমতলা গ্রামের কৃষক মো. রকি। তিনি জানান, প্রতি মৌসুমে শ্যালো ইঞ্জিনের মালিককেই দিতে হয় সাড়ে তিন থেকে চার মণ ধান। আবার সেচ নেওয়ার জন্য কৃষককে কিনে দিতে হয় তেল। ইঞ্জিন ও জমিভেদে বোরো ধানের ক্ষেত্রেই কৃষকের লাগে ৪০ থেকে ৬০ লিটার তেল। ধান ও তেল দেওয়ার হিসাবের বাইরে সেচ নিলে প্রতি ঘণ্টায় গুনতে হয় ১০০ টাকা। ৬০০ মিলিলিটার থেকে এক লিটার তেলে এক ঘণ্টা চলে শ্যালো ইঞ্জিন। এখন তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের খরচে পাওয়া যাবে না সেচের পানি।

রাজশাহীর পবা উপজেলার চরমাজারদিয়াড় গ্রামের কৃষক মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে ত্যাল লিতে যাইয়্যা হঠাৎ শুনি দাম বাইড়া গেলছে। গতকাল লিটারে ৮৮ টাকা লিয়্যাছে, আইজ লিলো ১৩০। আমি তো অবাক! আগেই মুনে করেন, ধান করতে গেলে বিঘায় ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়্যাছে। ২০-২০ মুণ ধান পাইয়্যাছি। লাভ বলতে কিছু থাকত না।’

চর আষাড়িয়াদহের আমতলা খাসমহলে জ্বালানি তেল বিক্রি করেন ইয়াকুব আলী। তিনি জানান, এপার থেকে চরে তেল নিয়ে যেতে লিটারে ৫ থেকে ৭ টাকা খরচ হয়েই যায়। তাই সরকারি মূল্যের চেয়ে চরে অন্তত ১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে হয়।

আমতলা গ্রামের কৃষক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘কমপক্ষে দুই হাজার টাকা মণ হতে হবে। তাহিলে চরের কৃষকের জানডা বাঁচবে।’

চর আষাড়িয়াদহ উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মনিরুল হক বলেন, চরে যেকোনো ফসলের ফলন ভালো হয়। কিন্তু এখানে উৎপাদন খরচ বেশি, ফসলের দাম কম। ধানের ক্ষেত্রেই পারের চেয়ে চরে মণপ্রতি ১০০ টাকা কম পান চাষিরা। তাই চরের কৃষকের জন্য আলাদা নীতিমালা প্রয়োজন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে কৃষিতে তেমন খারাপ প্রভাব পড়বে না। কারণ, এখন কৃষিযন্ত্রের বেশির ভাগই তো চলে বিদ্যুতে।’ চরে বিদ্যুৎ না থাকার কথা মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ‘চরে কিছুটা খারাপ প্রভাব পড়বে। এটা কতটা, সেটা আমাদের স্টাডি করে দেখা হয়নি। আগে দেখি, তারপর বলব।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ