কোনো ধরনের পারিশ্রমিক ছাড়াই দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে মধুসূদন মিউজিয়াম দেখভাল করছেন ষাটোর্ধ্ব শামসুর রহমান। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রতি ভালোবাসা থেকেই পারিশ্রমিক ছাড়াই এ দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান শামসুর রহমান।
জানা গেছে, কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে ১৯৮৯ সালের ২৬ জানুয়ারি মধুসূদন মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শামসুর রহমান এ মিউজিয়ামের দেখভাল করে আসছেন। মিউজিয়ামটিতে রয়েছে মধুকবির ছবিসহ তাঁর দুই স্ত্রী, কবির বংশধরদের ছবিসহ তথ্য, মধুসূদনের লন্ডনের গ্রেইজ ইনে ভর্তির আবেদনপত্র ও টাকা জমা দেওয়ার রসিদ, ১২০ বছর আগের কবির বাড়ির ছবি, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে লেখা কবির চিঠি, তাঁর শিক্ষকদের ছবিসহ তথ্য, কবিকে নিয়ে বিভিন্ন লেখকের লেখা বই, কবির পড়াশোনা করা হিন্দু কলেজ ও মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনের ছবি, ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীর রুদ্য শাতিয়ে নামের বাড়ি যেখানে মধুসূদন দত্ত থাকতেন সেই বাড়ির ছবি। এ ছাড়া রয়েছে স্মৃতিফলক, পুরুলিয়া গির্জায় মধুসূদনের নাম-সংক্রান্ত তালিকাসহ তথ্যচিত্র।
প্রতিদিন সকালে এসে মধুসূদন মিউজিয়ামের দরজা খোলেন শামসুর রহমান। বাড়ি ফেরেন সন্ধ্যায়। শামসুর রহমানের আন্তরিকতায় মুগ্ধ হন পর্যটকেরা।
শামসুর রহমান বলেন, ‘বিনা পারিশ্রমিকে মধুকবির প্রতি ভালোবাসা থেকেই এ প্রতিষ্ঠানের দেখভাল করে যাচ্ছি। আমার বয়স এখন ৬১ বছর। আমি যত দিন বেঁচে আছি, তত দিন পর্যন্ত দেখাশোনা করব। তবে আমার মৃত্যুর পর এ প্রতিষ্ঠানের কী হবে তা নিয়ে চিন্তিত থাকি। মধুসূদনের ভক্তদের জন্য এ প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখতে সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
মধুসূদন একাডেমির পরিচালক কবি ও মধুসূদন গবেষক খসরু পারভেজ বলেন, ‘মিউজিয়ামে দায়িত্বরত শামসুর রহমান বিনা বেতনে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কাজ করছেন, যা প্রশংসার দাবি রাখে। মাঝেমধ্যে মিউজিয়ামে থাকা আমাদের প্রকাশনার বই বিক্রি হলে সেটা থেকে তিনি সামান্য কিছু সম্মানী পান।’