ইসলামের সংবিধিবদ্ধ নিয়মকানুন ও বিধিবিধানসংবলিত নির্ভুল ঐশী কিতাব পবিত্র কোরআন। এটিকে ‘হুদাল্লিল আলামিন’ বা ‘হুদাল্লিন্নাস’ অর্থাৎ, বিশ্ববাসীর জন্য পথনির্দেশক বা সমগ্র মানবজাতির জন্য হেদায়েতের গ্রন্থ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সর্বজনীন-বিশ্বজনীন এ মহাগ্রন্থে আন্তধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতি গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে—এমন অনেক বাণী বিবৃত হয়েছে। আমরা এখানে কয়েকটি বাণী উল্লেখ করছি—
‘ধর্মে কোনো জোরজবরদস্তি নেই।’ (সুরা বাকারা: ২৫৬)
‘তোমাদের ধর্ম তোমাদের কাছে আর আমার ধর্ম আমার কাছে।’ (সুরা কাফিরুন: ৬)
‘আমাদের কর্ম আমাদের কাছে আর তোমাদের কর্ম তোমাদের কাছে (প্রিয়)।’ (সুরা শুরা: ১৫)
‘তোমার প্রতিপালক ইচ্ছা করলে পৃথিবীতে যারা আছে তারা সকলেই ইমান আনয়ন করত। তবে কি তুমি বিশ্বাসী হওয়ার জন্য মানুষের ওপর জবরদস্তি করবে?’ (সুরা ইউনুস: ৯৯)
‘আমি প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছি নিয়মকানুন, যা তারা পালন করে। সুতরাং তারা যেন তোমার সঙ্গে এ ব্যাপারে বিতর্কে লিপ্ত না হয়। তুমি তাদের তোমার প্রতিপালকের দিকে আহ্বান করো। নিশ্চয়ই তুমি সরল পথেই প্রতিষ্ঠিত।’ (সুরা হজ: ৬৭)
‘তোমাদের প্রত্যেকের জন্য শিরআত (আইন) ও স্পষ্ট পথ নির্ধারণ করেছি। ইচ্ছা করলে আল্লাহ তোমাদের এক জাতি করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তোমাদের যা দিয়েছেন তা দিয়ে তোমাদের পরীক্ষা করতে চান। তাই সৎকর্মে তোমরা পারস্পরিক প্রতিযোগিতা করো।’ (সুরা মায়িদা: ৪৮)
পবিত্র কোরআনে বিবৃত আল্লাহ পাকের উল্লিখিত বাণীসমূহের ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন; বিভিন্ন ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহনশীলতা ও সম্প্রীতির বিষয়টিই এসব আয়াতে নির্দেশিত হয়েছে। শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে আমাদের জাতীয় জীবনে এসব নির্দেশনার বাস্তবায়ন জরুরি।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন, চেয়ারম্যান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়