দিনাজপুর ও বিরল প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবাসিক হলের তিন তলা থেকে পড়ে শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা শাহরিয়ারের নিহত হওয়ার ঘটনাটিকে সাধারণ দুর্ঘটনা হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। সেই সঙ্গে তাঁরা চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন। তাই পুরো ঘটনার সঠিক কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
শাহরিয়ার দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বেতুড়া গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর বাড়িতে দেখা যায় সেখানে চলছে শোকের মাতম।
বারবার ছেলের কথা বলে চিৎকার করে কাঁদছিলেন মা শাহানা খাতুন। বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য গোলাম মোস্তফা ছেলের এ মৃত্যুকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না।
শাহরিয়ার (২৩) রাবির মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়াশোনা করতেন। তিনি হবিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।
সহপাঠীরা জানান, গত বুধবার রাত আটটার দিকে হলের তৃতীয় ব্লকের ছাদ থেকে কিছু একটা পড়ার শব্দ পাওয়া যায়। তখন কয়েকজন গিয়ে দেখেন, হল মসজিদের সামনে নলকূপের স্লাবের ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন শাহরিয়ার। তখন দ্রুত তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। গতকাল বাদ আছর বেতুড়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।
প্রতিবেশীরা জানান, মেধাবী শাহরিয়ার ছোট থেকেই ছিলেন শান্ত স্বভাবের। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন মেজ। মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন এমনকি এলাকাবাসী কেউই তাঁর মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে মেনে নিতে পারছেন না।
পরিবারের সদস্যরা বলেন, মৃত্যুর আধঘণ্টা আগেও মায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন শাহরিয়ার। রাতে খেয়েছেন কি না তা মা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মাসহ পরিবারের সদস্যরা। বিশ্বাস করতে পারছেন না, কিছুক্ষণ আগেই যে ছেলের সঙ্গে কথা বলেছেন সে ছেলে আর নেই।
মা শাহানা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলের এভাবে মৃত্যুর খবর পাব তা কখনো ভাবিনি। আমার সন্তান কারও ক্ষতি করতে পারে না। আমার সব কথা শুনতো, সন্তানের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ বলেন, ‘শাহরিয়ারের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি মর্মাহত। তাঁর এই অকাল মৃত্যুর বিষয়টি সন্দেহজনক। আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে মৃত্যুর বিষয়টির সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’