ভোলার নদীতে ৩৩ বছর আগে দুই ভাই খুনের মামলার নথি অবশেষে পাওয়া গেছে। রায়ের প্রায় ২০ বছর পর সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখার রেকর্ড রুম থেকে নথিটি খুঁজে বের করা হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গতকাল মঙ্গলবার নথি পাওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। ওই নথি অনুযায়ী, মামলাটির বিচারকাজের ওপর ১৯৯৫ সালে দেওয়া স্থগিতাদেশ ২০০৪ সালে প্রত্যাহার করেন হাইকোর্ট। তবে রায়টি বিচারিক আদালতে না পৌঁছানোয় বিচারকাজ আর শুরু হয়নি।
‘ভোলার নদীতে দুই ভাই খুনের বিচার হয়নি ৩৩ বছরেও’ শিরোনামে গত ৩১ জানুয়ারি আজকের পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। পরে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখার রেকর্ড রুম থেকে মামলার নথি বের করা হয়।
বাগেরহাট থেকে ভোলায় গিয়ে নদীতে মাছ ধরার সময় ১৯৯১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি খুন হন সহিদুল ইসলাম (১৯) ও তাঁর ছোট ভাই কামাল শেখ (১১)। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোলার চরফ্যাশন থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ঘটনার সময় অন্য নৌকায় থাকা তাঁদের চাচা আব্দুল বারেক। তদন্ত শেষে ১৯৯১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের শাহজাহান শেখ, আব্দুর রব, হারুন আলী শরীফ, মোশারফ ও এরসাত এবং ভোলার চরফ্যাশনের মোস্তফা ও আবুল কালামের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
১৯৯৫ সালে ভোলার দায়রা জজ আদালতে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছিল। অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই জোড়া খুনের মামলায় সর্বশেষ ১৯৯৫ সালের ৬ মে যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। সেদিন সাত আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান আদালত। পরে কারাগার থেকে আসামিরা আদালত পরিবর্তন ও মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৪ জুন রুল জারি ও মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পরে আসামিরা ভোলার আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। তবে ২০০৪ সালের ২৫ অক্টোবর ওই রুল নিষ্পত্তি করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেন হাইকোর্ট। তবে সেই নথি বিচারিক আদালতে না যাওয়ায় শুরু হয়নি বিচারকাজ।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গতকাল বলেন, ‘হাইকোর্ট রুল খারিজ করে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করলেও দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, রায়টি বিচারিক আদালতে পৌঁছায়নি। ফলে প্রায় ৩০ বছর ধরে মামলাটি বিচারাধীন রয়ে গেছে। মামলাটির বিষয়ে জানতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি লিখেছিলাম। পরে রেকর্ড রুম থেকে নথি বের করে নকল সরবরাহ করা হয়েছে। এখন আমরা বাকি ব্যবস্থা করব। ইতিমধ্যে সলিসিটরকে জানিয়েছি। তিনি ওই আদালতকে (ভোলার) হাইকোর্টের আদেশের বিষয়টি জানাবেন।’