আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টের বয়লারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ৪৬ দিন আগে। দুর্ঘটনার দেড় মাস পার হয়ে গেলেও মেরামত শেষে উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হয়নি। ইউরিয়া ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন না হওয়ায় সরকারকে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। সে হিসাবে ৪৬ দিন কারখানা বন্ধ থাকায় সরকার ৫০৬ কোটি টাকার আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এদিকে কারখানা বন্ধ থাকায় লোকসানের পরিমাণ দীর্ঘ হচ্ছে। মেরামত শেষে সিইউএফএল আবার কবে উৎপাদনে যাবে কেউ সুস্পষ্ট করে বলতে পারছেন না তা। গত ২১ নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে সিইউএফএল।
কারখানা চালুর বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কখন আবার চালু হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে মেরামত শেষে আবার চালু হতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগতে পারে।
মিজানুর রহমান আরও বলেন, প্রতিদিন সিইউএফএলে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৫০ টন ইউরিয়া সার উৎপাদন হয়। সরকারি ভর্তুকি দিয়ে প্রতি টন ২০ হাজার টাকা করে বিক্রি হয়।
সে হিসাবে প্রতিদিন সরকারের ২ কোটি ২০ লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। পাশের কাফকো সার কারখানা থেকে সরকার আন্তর্জাতিক মূল্যে অথবা আমদানি মূল্যে প্রতি টন ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকায় কিনছে। সে হিসাবে প্রতিদিন ইউরিয়া সার বাবদ সাত কোটি টাকা লাগছে।
আর অ্যামোনিয়া প্ল্যান্ট থেকে প্রতিদিন ক্ষতি ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে সিইউএফএল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন সরকারের লোকসান গুনতে ১১ কোটি টাকা। সূত্র জানায়, গত ২১ নভেম্বর সকালে সিইউএফএলের অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টের লিপারমারে প্রাইমারি রিফরমারি ওয়েস্টেস বয়লারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এ অগ্নিকাণ্ডের ফলে কারখানায় ইউরিয়া সার ও আমোনিয়া উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকার ইউরিয়া ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও অনেক চেষ্টা করেও প্রতিবেদন সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া য়ায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিইউএফএলের একজন কর্মকর্তা বলেন, কারখানার অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টের গ্যাস ক্যাট এক হাজার ডিগ্রি তাপমাত্রায় থাকে। এ সময় আগুন লাগলে পানি দিয়ে নেভানোর নিয়ম নেই। এ সময় পানি দিলে আগুন আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
সিইউএফএলের ফায়ার অ্যান্ড সেফটি বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. আব্দুর রব বলেন, ‘এ কারখানায় নিরাপত্তার একটি শাখা রয়েছে। তবে ইউরোপ-আমেরিকার মতো ব্যবস্থা আমাদের নেই।’