বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচন ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গত সোমবার মে দিবসে শোভাযাত্রা ও সমাবেশে নৌকার মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত ভোট চেয়েছেন নগরবাসীর কাছে। কয়েক ঘণ্টা পর একই স্থানে তাঁর ভাতিজা বর্তমান মেয়র এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারীরা বিপুল পরিমাণ নেতা-কর্মী জমায়েত করে মহড়া দিয়েছেন।
মনোনয়নের ১৭ দিন পার হলেও নৌকার প্রার্থীর পাশে না দাঁড়িয়ে পৃথক এ মহড়াকে সন্দেহের চোখে দেখছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতারা। এতে নৌকার প্রার্থী ঝুঁকিতে পড়তে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে মে দিবসের সমাবেশ ও শোভাযাত্রায় যোগ দেন নৌকার মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত। ওই দিন বিকেলে একই স্থানে রাজধানীতে অবস্থান করা মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নির্দেশে মে দিবস উপলক্ষে বড় মহড়া দেন তাঁর অনুসারীরা। এ সময় নেতা-কর্মীরা নৌকা, নৌকা বলে স্লোগান দিতে থাকেন। একই মঞ্চে আওয়ামী লীগের এমন পৃথক কর্মসূচিতে দলে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ছাত্রলীগ নেতা মঈন তুষার বলেন, ভোটের সময় সবকিছু চলে নৌকার প্রার্থীকে ঘিরে অথচ মেয়র সাদিক বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতা-কর্মী ভাড়া করে এনে নৌকা প্রার্থীর মে দিবসের সমাবেশের কাউন্টার হিসেবে একটি মহড়া দিয়েছেন। এতে জনগণ বিভ্রান্তিতে পড়ছে, আওয়ামী লীগ কি তাহলে ভাগ হয়ে গেল।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং বরিশাল শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর আমিন উদ্দিন মোহন বলেন, সাদিক নেতা-কর্মীদের নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাঁড় করাচ্ছেন। এই মহড়া ষড়যন্ত্রমূলক। নৌকার প্রার্থীকে ঝুঁকিতে ফেলতে দলীয় পদ ব্যবহার করে নেত্রীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
মেয়র সাদিক অনুসারী নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, মে দিবসে প্রার্থীর সঙ্গে হাইব্রিডরা মিছিল করেছেন। যে নির্বাচনী পরিচালনা কমিটি গঠন হয়েছে, তা দিয়ে ভোট ওঠানো সম্ভব নয়। ওই কমিটিতে প্রার্থীকে হাইব্রিডরা ঘিরে ধরেছেন।
নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং প্যানেল মেয়র গাজী নইমুল হোসেন লিটু বলেন, নগর কমিটির মেয়াদ শেষ না হলে এই নেতৃত্বকে নৌকার জন্য কী ক‘রে ঝুঁকি মনে হবে!
এদিকে গতকাল নগরভবনের সামনে গণসংযোগকালে নৌকার মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, আওয়ামী লীগে কোনো বিভক্তি নেই। বিভক্তি ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি। কেন্দ্র এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।