দিনাজপুরের বিরামপুরে খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রির কেন্দ্রগুলো ভোর থেকে নারী-পুরুষ দখল করে রাখছেন। তাঁরা চাল নিতে দাঁড়ান দীর্ঘ সারিতে। সাধারণ বাজারে দাম বেশি হওয়ায় ওএমএসের চাল পেয়ে খুশি এসব নিম্নআয়ের মানুষ। এ ছাড়া চাহিদার তুলনায় ক্রেতা বেশি হওয়ায় অনেকে চাল না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
গত মঙ্গলবার ভোর ৬টার পর থেকে বিরামপুর পৌর শহরের ঢাকামোড়, কেডিসি রোড, ঘাটপাড় ও কলেজবাজার ওএমএস কেন্দ্রে গিয়ে নারী-পুরুষের দীর্ঘ সারি চোখে পড়ে। ৩০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে আসা লোকজন আগে সিরিয়াল পাওয়ার আশায় তাঁরা ব্যাগ বা ইট রেখে জায়গা দখল করে রাখছেন। সকাল ৯টা থেকে চাল দেওয়া শুরু হয়।
প্রতিবছর চলতি আমন মৌসুমে ধান রোপণের পর এই সময়টায় নিম্নআয়ের মানুষ কিছুটা আর্থিক সংকটে পড়েন। ঠিক সেই মুহূর্তে সরকার তাঁদের কথা বিবেচনা করে স্বল্পমূল্যে চাল বিক্রি করে।
সারা দেশের ন্যায় বিরামপুরেও ৩০ টাকা কেজি দরে ডিলারের মাধ্যমে ওএমএসের চাল বিক্রি করছে সরকার। বিরামপুর পৌর এলাকায় চারজন ডিলার হচ্ছেন জাহাঙ্গীর আলম বুলু, মামুনুর রশিদ, আবু হেনা মো. মোস্তফা কামাল ও আনিছুর রহমান। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন ৮০০ ক্রেতার মধ্যে ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল বিক্রি করছেন ডিলাররা।
ঢাকা মোড়ে ওএমএস কেন্দ্রে চাল কিনতে আসা রাব্বী হোসেন বলেন, ‘চাল নিতে ভোর ৬টায় এসে বসে আছি। আবার অনেকেই সিরিয়ালের জন্য ব্যাগ রেখে চলে গেছেন, সময় হলেই চলে আসবেন। আমরা গরিব মানুষ বাজারে চালের অনেক দাম, এখানে বাজারের চেয়েও অর্ধেক দামে চাল পাচ্ছি, এতে আমাদের অনেক উপকার হচ্ছে।’ সায়রা বিবি বলেন, ‘বাজারে চালের দাম বেশি, তাই খোলাবাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে এসেছি। এখানে কম দামে পাওয়ায় আমাদের অনেক উপকার হচ্ছে।’
ভ্যানচালক খুরশিদ আলম বলেন, ‘বাজারে চাল ৫০-৬০ টাকা কেজি। আর খোলাবাজারে ৩০ টাকা। আমরা স্বল্প আয়ের মানুষ, তাই লাইনে দাঁড়িয়ে চাল কিনছি। এতে চাল কেনার উপরি টাকা দিয়ে কাঁচাবাজার করে পরিবার নিয়ে খাওয়া যাবে।’
ওএমএস চালের ডিলার জাহাঙ্গীর আলম বুলু জানান, বরাদ্দ বাড়ানো হলেই সংকট কেটে যাবে। পৌর এলাকায় ২১ হাজার লোক বসবাস করলেও শুধু ৮০০ পরিবারকে ওএমএসের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া চাহিদার চেয়ে ডিলারদের কাছে বরাদ্দ কম থাকায় অনেকেই খালি হাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
বিরামপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, উপজেলায় গত মাস থেকে ওএমএসের চারজন ডিলার নিয়োগ দিয়ে তাঁদের মাধ্যমে ডিলারপ্রতি এক টন চাল মানুষের মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় লোকজন বেশি আসছে চাল নিতে।