ওয়াল্ট হুইটম্যান ছিলেন অন্যতম প্রভাবশালী মার্কিন কবি। তিনি ছিলেন একজন মানবতাবাদী কবি, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক ও মুক্ত ছন্দের জনক। তাঁকে গণতন্ত্রের কবি এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় কবিও বলা হয়।
হুইটম্যানের জন্ম ১৮১৯ সালের ৩১ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে। ১৮২৩ সালে তাঁর পরিবার লং আইল্যান্ড ছেড়ে ব্রুকলিনে চলে যায়। তিনি একাডেমিক পড়াশোনা বেশি দিন করেননি। মাত্র ১১ বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দেন। এরপর প্রিন্টিং ব্যবসার শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করেন।
১৮৫৫ সালে তিনি নিজের টাকায় কবি ও প্রকাশকের নামবিহীন ‘লিভস অব গ্রাস’ নামে একটা কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন। সারা জীবন তিনি এই গ্রন্থের সংশোধন ও সংযোজন করেছেন। তাঁর এই কাব্যগ্রন্থের ১০টি সংস্করণ বের হয়েছিল। এটাকে সবচেয়ে আলোচিত ও পঠিত কাব্যগ্রন্থও বলা হয়। আবার তাঁর রচনা যথেষ্ট বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল; বিশেষ করে এই কাব্যগ্রন্থ অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিল। তাঁর বিখ্যাত কবিতার নাম ‘সং অব মাইসেলফ’। এ কবিতাটি গোটা বিশ্বের মানুষের উদ্দেশে একটি দীর্ঘ ভাষণ।
ওয়াল্ট হুইটম্যান তাঁর লেখায় সর্বদা আমেরিকার নিপীড়িত মানুষ এবং তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের কথা বলেছেন। একসময় তিনি সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন। কিছুদিন পর রাজনৈতিক কারণে এ পেশা ছেড়েও দেন।
সর্বজনীনতা ছিল তাঁর কবিতার মূল সুর।
গণতান্ত্রিক জীবনধারায় গভীরতম বিশ্বাস নিয়ে ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণিনির্বিশেষে সবাইকে তিনি দেখেছেন মানবিকতার দৃষ্টিতে। সারা জীবনই তিনি ছিলেন রাজনীতিসচেতন।
তিনি দাসপ্রথা বিলোপের ডাক দিয়েছিলেন। আবার একসময় তিনি এটাকে গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর বলে মনে করেন। আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় ওয়াশিংটনের একটি হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছিলেন হুইটম্যান।
চিরকুমার এই মানবিক কবি ১৮৯২ সালের ২৬ মার্চ নিউজার্সির ক্যামডেনে মৃত্যুবরণ করেন।