ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের গ্রিন ভিউ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় গর্ভের সন্তানসহ প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা এক লাখ টাকায় মীমাংসা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রোববার রাত পৌনে আটটার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খাদিজা বেগম নামের ওই প্রসূতি মারা যায়। পাঁচ সন্তানের মা খাদিজা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের মাছিহাতা ইউনিয়নের খেওয়াই গ্রামের সৌদিপ্রবাসী নয়ন মিয়ার স্ত্রী।
সূত্র জানায়, মৃত্যুর পরে রাতেই বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রোগীর স্বজনদের নিয়ে বৈঠক করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর আগে প্রসূতির স্বজনেরা হাসপাতালের সামনে দোষীদের বিচারের দাবিতে অবস্থান নেন।
ভাশুর শরিফুল হাসান জানান, খাদিজার পরিবারকে এক লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের এই টাকা দেবে।
এর আগে রোববার সাড়ে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা খাদিজার বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হলে শনিবার রাত ১১টার দিকে তাঁকে শহরের কুমারশীল মোড় এলাকার গ্রিন ভিউ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসক জিনিয়া খানের তত্ত্বাবধানে ভর্তি করানো হয়। রোববার বেলা ১১টায়ও চিকিৎসক খাদিজার কোনো খোঁজ না নিলে স্বজনেরা চাপ সৃষ্টি করেন। পরে আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে খাদিজার গর্ভে থাকা সন্তান মৃত বলে জানা যায়। পরে চিকিৎসক জিনিয়া খান ও হাসপাতালটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থাকা তাঁর স্বামী ডা. আবু হামেদ গর্ভে থাকা সন্তানের স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে খাদিজার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়।
শরীফুল হাসান বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মৃত সন্তানকে অপসারণের জন্য চিকিৎসককে বারবার অনুরোধ করা হলেও তাঁরা শোনেননি। একপর্যায়ে খাদিজার খিঁচুনি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান।
অভিযুক্ত চিকিৎসক আবু হামেদ বলেন, ‘রোগীর বয়স সাধারণ প্রসূতির তুলনায় বেশি ছিল। তাঁর খিঁচুনি ও রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল। রোগীকে বাঁচানোর জন্য সব ধরনের চিকিৎসা করেছি আমরা।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’