Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

দখল, দূষণে ‘বিষে নীল’ বিষখালী

রুদ্র রুহান, বরগুনা

দখল, দূষণে ‘বিষে নীল’ বিষখালী

ইট পোড়ানোর ক্ষেত্রে সংশোধিত আইন অনুযায়ী কোনো জনবসতি বা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের তিন কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। এসবের কোনো কিছুই যেন তোয়াক্কা করা হচ্ছে না বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বাইনচটকি ফেরিঘাট এলাকায়। এই এলাকায় সংরক্ষিত বন থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যেই ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। বিষখালী নদীর চর দখল করে বাড়ানো হচ্ছে ভাটা দুটির আয়তন। এতে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি, নদীর জলজ পরিবেশ এবং সংরক্ষিত বন ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

বাইনচটকি ফেরিঘাট এলাকাটি পাথরঘাটার কাকচিড়া ইউনিয়নে। সম্প্রতি সেখানে দেখা গেল, বিষখালী নদীর চরে আরএসবি-১ ও আরএসবি-২ নামের দুটি ভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোর পাশে জেগে ওঠা চরে কংক্রিটের খুঁটি ও কাঁটাতার দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, প্রতিবছর পরিধি বাড়ানো হয়। ইট পোড়ানোর মৌসুম ছাড়াও সারা বছর ভাটার ইটের টুকরা ফেলা হয় জাগতে থাকা চরে। এতে নদীর জোয়ার-ভাটার স্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একটির এক পাশে দেখা গেল, চরের মাটি কেটে তিনটি বড় দিঘি খনন করা হয়েছে। মূলত এখানকার মাটি কেটে ভাটায় ইট তৈরি করা হচ্ছে।

এই ভাটা দুটির মালিক আবদুর রাজ্জাক (কিসলু)। তিনি জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাটামালিক প্রভাবশালী। তিনি প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের ‘ম্যানেজ করেই’ ভাটা পরিচালনা করছেন।

তবে আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘নদীর জায়গা দখল করছি না। যে জায়গা ভরাট করা হচ্ছে, তা আমার রেকর্ড করা সম্পত্তি। অল্প জায়গায় হয়তো ইট ফেলা হচ্ছে। ব্যক্তিমালিকানা জমিতে আমি ভাটা করেছি। এখানে কোনো সরকারি জমি নাই। উপজেলা প্রশাসক আমাদের সীমানা নিধারণ করে দিয়েছে।’

তবে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বরিশাল বিভাগী সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন বলেন, ‘নদীতীরের ভূমি ভরাট করা বেআইনি। এতে নদী স্বাভাবিক স্রোতধারা বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে নদীতে পলি জমে চর জেগে ওঠে। এভাবে ভাটার পরিধি বাড়িয়ে নদীর তীর ভরাট করা অপরাধ।’

এদিকে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অল্প কিছু জমি কিনে সেখানে ইটভাটা করেছিলেন আবদুর রাজ্জাক। কিন্তু পাশে চর জাগার সঙ্গে সঙ্গে জায়গার আয়তন বেড়েছে। ভাটার ছবি তুলতে গেলে এই প্রতিবেদককে বাধা দেন মনির নামের এক ব্যক্তি। তিনি নিজেকে ওই ভাটার ব্যবস্থাপক পরিচয় দেন। চর দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে বাজারে (বরগুনা শহরে) গিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলব।’

এ প্রসঙ্গে বাইনচকি এলাকার বাসিন্দা আবদুল হক বলেন, ‘ভাটামালিক যে জমি কিনেছেন ধীরে ধীরে তার প্রায় দশ গুণ চর দখল করেছেন। যতটুকু চর জাগে, তা ভরাট করা হয়। ভাটামালিক প্রভাবশালী।... কেউ প্রতিবাদ করলে হুমকি দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চর দখলে নিয়ে ভাটায় মাটি ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে ভাটার কারণে সংরক্ষিত বনের হরিণসহ অন্যান্য প্রাণীর বংশবিস্তার হুমকির মুখে পড়েছে। এগুলোর কারণে পাশের বাইনচটি গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় উপপরিচালক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আসলে ইটভাটাগুলো যখন অনুমোদন নিয়েছিল তখন আশপাশে বন বিভাগের কোনো সংরক্ষিত বন ছিল না। এখন যদি সেখানে তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো সংরক্ষিত বন থেকে থাকে তাহলে আমরা তাদের লাইসেন্স নবায়ন করব না এবং লাইসেন্স বাতিল করব। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি