চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় আমন ও রাজাশাইল ধান চাষের শুরুতেই সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত দাম দিয়েও সার না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। অল্পকিছু ডিলারদের কাছ থেকে তাঁদের উচ্চমূল্যে সার কিনতে হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
এদিকে সারের এই সংকটে আমন চাষের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, চাহিদা অনুযায়ী সারের বরাদ্দ না পাওয়া ও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আমন ও রাজাশাইল ধান রোপণ করায় এ সংকট দেখা দিয়েছে।
বাজারে ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা বেশি দামে সার কিনলেও তাঁদের কোনো রসিদ দিচ্ছেন না ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখার নিয়ম থাকলেও কোনো ডিলার, খুচরা ব্যবসায়ীরা এমন নিয়ম মানতে দেখা যাচ্ছে না। ডিলারের দোকানে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ইউরিয়া সার বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা, ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ৮০০ টাকার মধ্যে নিচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ১ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে নিচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০, মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ৯০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা, বাংলা ডিএপি ৮০০ টাকার মধ্যে নিচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সার কিনতে আসা হারামিয়া ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল ইসলাম, মগধরা ইউনিয়নের কৃষক নূরুল আমিন, রহমতপুর ইউনিয়নের আফছার জানান, তাঁরা অধিক দামে ধারে চারা কিনে জমি রোপণ করছেন। এখন বাজারে পর্যাপ্ত সার নেই। যে কয়েক বস্তা সার পাচ্ছেন তা-ও অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে। সারের জন্য কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত দামে সার কিনতে হলে লাভের তুলনায় লোকসানই বেশি হবে বলেও মন্তব্য করেন তাঁরা।
ডিলার রকিবুল মাওলা বলেন, ‘আমরা চাহিদা অনুযায়ী সার পাইনি। কৃষকদের জন্য অন্য জায়গা থেকে অতিরিক্ত দামে সার এনে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।’
সার সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল বাচেত বলেন, ‘লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী সারের বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। সার সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি যাতে কোনো ডিলার অধিক মূল্য সার বিক্রি করতে না পারে।’