বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-মিয়ানমার সীমান্তে বৃষ্টির কারণে গতকাল সোমবার সকালের দিকে গোলাগুলির শব্দ শোনা না গেলেও বেলা বাড়ার পর মিয়ানমার থেকে ফের গোলাগুলি শুরু হয়। ঘুমধুমের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ওয়ালিডং পাহাড় এবং খ্য মং সেক পাহাড় থেকে সরকারি বাহিনী ও স্বাধীনতাকামী ‘আরাকান আর্মির’ গেরিলারা পরস্পরের দিক লক্ষ করে মর্টারশেল ও ভারী গোলা ছুড়ছে। এ দুটি এলাকায় মিয়ানমারের উপজাতীয় কয়েকটি সম্প্রদায় বসবাস করে। যুদ্ধের কারণে তাঁদের পক্ষে সেখানে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
ঘুমধুমের জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দাদের অনেকে বলেছেন, ‘সম্প্রতি মিয়ানমারের ওইসব উপজাতীয় সদস্য সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যাতে মিয়ানমারের উপজাতি বা নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।’
ঘুমধুমের তমব্রু এলাকার বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, ‘উপজেলার ঘুমধুম, তমব্রু, বাইশফাঁড়ি, ফাত্রাঝিরি, কোনারপাড়া থেকে গতকালের গোলাগুলির শব্দ অন্যদিনের তুলনায় অনেক কম শোনা গেছে। তবে কয়েক দিন আগে দুই দফায় সীমান্তের ওপার থেকে এপারের ঘুমধুমে মর্টারশেল এসে পড়া ও এক দিন গুলির খোসা পাওয়ায় সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস বলেন, ‘সীমান্তের পরিস্থিতি তাঁরা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।’ তবে সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে তিনি বলেন, ‘সীমান্তের এপারের লোকজন যেন আতঙ্কিত না হয় সে বিষয়ে প্রশাসন ও সীমান্ত বাহিনী কাজ করছে।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফি উল্লাহ বলেন, ‘ঘুমধুম সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় মিয়ানমারে প্রায় এক মাস ধরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী আরাকান বাহিনীর সংঘর্ষ ও গোলাগুলি যেকোনো সময়ই হচ্ছে। সে দেশের নিক্ষেপ করা মর্টারশেল ঘুমধুমের অভ্যন্তরে পড়ায় বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্তের লোকজনের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। অনেকে ভয়ে কাজে যাচ্ছেন না।’