কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে গ্রামীণ মেলার আড়ালে চলছে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া। এতে একদিকে যেমন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা ও যুবসমাজ। তবে গ্রামীণ ঐতিহ্য মেলার নামে এসব অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে প্রশাসনের নেই কোনো নজরদারি ও তৎপরতা। এতে ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘মেলায় অশ্লীল নৃত্য, জুয়া, ভাগ্য পরিবর্তনের লটারি বা কোনো অবৈধ কার্যকলাপের অনুমতি নেই। সোমবার কথা বলেছি। এগুলো বন্ধ না হলে অ্যাকশনে যাব। মেলা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
গত সোমবার রাতে উপজেলার চাপাইগাছি মেলায় দেখা যায়, খোলা মাঠে বসেছে হরেক রকম দোকান। দোকানগুলোর পেছনে টিন দিয়ে ঘিরে কয়েকটা গোপন স্থান তৈরি করা হয়েছে। সেখানর কোথাও বসেছে জুয়ার আসর। কোথাও চলছে গানের তালেতালে অশ্লীল নৃত্য। আবার কোথাও চলছে র্যাফেল ড্র। সেখানকার অধিকাংশ দর্শকই যুবক ও শিক্ষার্থী।
এলাকাবাসী জানান, ১৬ মে থেকে মেলার অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু মেলা চলছে আরও অনেক আগে থেকে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন অপকর্ম চলছে। কিছু মানুষের স্বার্থে পুরো সমাজ নষ্ট হতে পারে না।
এ বিষয়ে মেলা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘অনুমতি নিয়েই মেলা চালানো হচ্ছে।’
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আজম হান্নান বলেন, ‘মেলার নামে যা হচ্ছে, তা মেনে নেওয়ার মতো নয়। এতে মানুষ আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে যুবসমাজ। কিছু সংখ্যক লোকের ব্যক্তিগত স্বার্থে এমন অবৈধ কার্যকলাপ চলতে পারে না। প্রশাসনকে গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখা উচিত।’
কুমারখালী নাগরিক কমিটির সভাপতি মো. আকরাম হোসেন, ছোটকাল থেকে শুনে আসছি চাপাইগাছিতে তালস্বাসের মেলা বসে। এবার চলছে জীবন্ত পুতুল নাচ, জুয়া, লটারি। যা অত্যন্ত অসামাজিক ও আইনবিরোধী। এ ব্যাপারে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা কাম্য নয়। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সমাজটা নষ্ট হয়ে যাবে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘মেলায় কি হচ্ছে আমার জানা নেই। তবে অবৈধ কোনো কিছুর অনুমোদন নেই। বিষয়টি জেলা প্রশাসন দেখছে।’
ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘৩১ মে পর্যন্ত মেলার অনুমতি রয়েছে। তবে সেখানে অবৈধ কোনো কিছুর অনুমোদন নেই। ১৬ মে থেকে মেলার অনুমতি থাকলেও মেলা চলছে আরও আগে থেকে। কবিগুরুর জন্মোৎসব অনুষ্ঠানের জন্য অন্যদিকে তেমন নজর দেওয়া হয়নি। তবে এখন শক্ত হাতে দমন করা হবে।’