Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

বৃষ্টির অভাবে ধানে চিটা

আব্দুর রব, মৌলভীবাজার

বৃষ্টির অভাবে ধানে চিটা

মৌলভীবাজারের কাওয়াদীঘি, হাকালুকি ও হাইল হাওরের কৃষকদের স্বপ্ন ভেঙেছে আগাম জাতের ব্রি-২৮ ধান চাষে। বৃষ্টি না হওয়ায় অতিরিক্ত তাপে ধান চিটা হয়ে গেছে। ব্লাস্ট রোগেও সংক্রমিত হয়েছে। আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ১৮ মণ ধান পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও মিলছে ৩ থেকে ৫ মণ করে।

কৃষকেরা জানান, বোরো মৌসুমে ব্রি-২৮ জাতের ধান কৃষকেরা চাষাবাদ করেন মূলত আগাম ও বেশি ফসল পেতে। অন্যান্য ধানের চেয়ে এটি আগে পাকে বলে নিরাপদে ফসল ঘরে তুলতে পারেন কৃষকেরা। কিন্তু এ বছর ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্লাস্ট রোগ ও চিটা দেখা দিয়েছে। কৃষকেরা ধার-দেনা করে চাষাবাদ করেছেন। ফলন ভালো না হওয়ায় ধার পরিশোধে তাঁদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

কাওয়াদীঘি হাওরের কৃষক মুকুন্দ নমশূদ্র বলেন, ‘প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় চার হাজার টাকা। প্রত্যাশা ছিল বিঘাপ্রতি ১৫ মণের ওপরে ধান পাওয়া যাবে। এখন মনে হচ্ছে তিন থেকে চার মণ মিলবে। আগাম জাতের এ ধান থেকে খরচও উঠবে না।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার ৪৩০ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে ৫৭ হাজার ৫৭০ হেক্টর। এর মধ্যে ব্রি-২৮ জাতের আগাম ধান চাষাবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে।

কাওয়াদীঘি হাওরের কৃষক সুখু বিশ্বাস আক্ষেপ করে বলেন, ‘ধার-দেনা করে চার বিঘা জমির মধ্যে দেড় বিঘায় ব্রি-২৮ ধান চাষ করি। যেখানে ২৫ মণের ওপরে ধান পাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ছয় মণের বেশি পাব না।’

হাওরাঞ্চলের কৃষকেরা মূলত বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। ভালো ফলন হলে মৌলিক চাহিদা মিটিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারেন। আর ফলন খারাপ হলে সারা বছর ধার করে চলতে হয়। এসব এলাকার কৃষকদের আতঙ্ক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ জন্য অনেক কৃষক নির্দিষ্ট জমির অর্ধেক বা এক-তৃতীয়াংশ আগাম জাতের ধান চাষাবাদ করেন। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি না হওয়া ও অতিরিক্ত তাপে ধানে শিষ রোগ, চিটা দেখা দিয়েছে।

কাওয়াদীঘি হাওর ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগাম জাতের ধান ছাড়া অন্যান্য ধান ভালো হয়েছে। তবে শঙ্কা রয়েছে অতিবৃষ্টি ও বন্যার। কারণ, এখনো ধান পাকতে ও কাটতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগবে।

তরুণ কৃষক সৌরভ বিশ্বাস বলেন, ‘আট বিঘা জমি এবার চাষাবাদ করেছি। এর মধ্যে ব্রি-২৮ ধান তিন বিঘা। খরচ বাঁচাতে কোনো শ্রমিক নিইনি। পরিবারের তিন সদস্য মিলে করেছিলাম বেশি ফসলের আশায়, কিন্তু সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবং খরায় ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।’

পাশের গ্রামের দিনমজুর রিপন সরকার ৫০০ টাকা মজুরিতে ধান কাটতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘এখন আগাম জাতের ধান কাটছি। মালিকপক্ষ আমাদের দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি দিচ্ছে। ধানের যে অবস্থা আমাদের মজুরি দিয়ে তাদের খুব একটা থাকবে বলে মনে হয় না।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামছুদ্দিন আহমদ জানান, জেলায় এ বছর ব্রি-২৮ জাতের আগাম ধান চাষাবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে। অতিরিক্ত তাপে আগাম জাতের ধানের ফলন ভালো হয়নি। এর মধ্যে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণও ছিল।

সামছুদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি আগাম জাতের ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষাবাদ করতে। এতে কৃষকেরা উপকৃত হবেন।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ