মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে চা-বাগান কারখানায় প্রতিদিন গড়ে চার-পাঁচ ঘণ্টা উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। চা-বাগান থেকে তুলে আনা হাজার হাজার কেজি কাঁচা চা-পাতা প্রক্রিয়াজাতের জন্য কারখানায় জমা করা হলেও লোডশেডিংয়ে তা নষ্ট হচ্ছে। এতে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন চা-বাগান সংশ্লিষ্টরা। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে জানান জেলা পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ চা সংসদের কমলগঞ্জের মনু-ধলই ভ্যালি সার্কেলের চেয়ারম্যান ও ন্যাশনাল টি কোম্পানির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শামসুল ইসলাম লোডশেডিংয়ের কারণে চা উৎপাদনের ক্ষতির কথা স্বীকার করে আজকের পত্রিকা বলেন, বর্তমানে রেকর্ড পরিমাণ চা-পাতা উত্তোলন করা হচ্ছে। তবে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ায় কারখানাগুলোতে ব্যাপক পরিমাণে চা-পাতা নষ্ট হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৩ আগস্ট থেকে দেশের ১৬৭টি বাগানের চা শ্রমিকেরা দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন। তাদের ধর্মঘটের কারণে দুই সপ্তাহ ধরে চা-পাতা উত্তোলন ও কারখানাগুলোতে উৎপাদন বন্ধ ছিল। মৌসুমের এ সময়ে অনুকূল আবহাওয়া থাকায় চা-গাছগুলোতে কুঁড়ি গজাতে থাকে। চা-শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে ২৭ আগস্ট মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর ২৮ আগস্ট থেকে চা-শ্রমিকেরা কাজ শুরু করেন। লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানায় প্রক্রিয়াজাতের জন্য রক্ষিত হাজার হাজার কেজি কাঁচা চা-পাতা নষ্ট হচ্ছে।
মৌলভীবাজার পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনালের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মীর গোলাম ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কয়েক দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ ভালো ছিল। বর্তমানে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। দৈনিক ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার স্থলে পাচ্ছি ১১ মেগাওয়াট। ফলে কিছুটা লোডশেডিং হচ্ছে। তবে চা উৎপাদন ব্যাহত ও নষ্ট হওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে অবহিত করেছি। আশা করা হচ্ছে, এ মাসের শেষের দিকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে।’