আজকের পত্রিকা ডেস্ক
১ আগস্ট ২০২২। জাপানের হিরোশিমার একটি গির্জার ভেতরে বসে আপন মনে বেহালা বাজাচ্ছেন ৫৬ বছর বয়সী এক নারী। তাঁর সে বেহালায় সুরে সুরে ভেসে বেড়াচ্ছে বিখ্যাত জার্মান সংগীতজ্ঞ জোহান সেবাস্তিয়ান বাখের ‘গিগু’ গানটি। নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামে থাকেন বেহালাবাদক এই নারী। উদ্দেশ্য একটাই, বিশ্বজুড়ে বেহালার সুরে সুরে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। কিন্তু ইউরোপ থেকে কেবল শান্তির বার্তা দিতে এত দূর আসার মূল কারণ আসলে কী?
জাপানি ভাষার সংবাদমাধ্যম ইয়োমিউরি শিম্বুনের এক প্রতিবেদন বলছে, এই বেহালাবাদকের নাম তোমোকো কুরিতা। এই হিরোশিমাতেই জন্ম তাঁর। ডাচ অর্কেস্ট্রার সদস্য এই কুরিতার বাবা হিরোশিমায় পারমাণবিক হামলায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়াদের একজন। বাবার কথা মনে করে হিরোশিমা দিবসের ৫ দিন আগে তাই নাগারেকাওয়া মেথডিস্ট চার্চ অব ক্রাইস্টে তাঁর বেহালাতে এই সুর তোলা। গির্জা থেকে মাত্র ৮০০ মিটার দূরে ছিল পারমাণবিক হামলার মূল কেন্দ্র। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল গির্জাটিও।
জাপানের হিরোশিমায় ভয়াবহ পারমাণবিক হামলার ৭৭তম বার্ষিকী আজ ৬ আগস্ট। ১৯৪৫ সালের এই দিনে হিরোশিমাতেই নিক্ষেপ করা হয় ‘লিটল বয়’ নামের মার্কিন পারমাণবিক বোমা। সংবাদমাধ্যম জাপান টাইমস বলছে, এতে প্রাণ হারান ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। এরপর ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে ফেলা হয় আরেকটি পারমাণবিক বোমা ‘ফ্যাট ম্যান’। এতে প্রাণ হারান ৭০ হাজার মানুষ।
হংকংভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ইউসিএ নিউজ বলছে, হিরোশিমার হামলায় বেঁচে যান তোমোকো কুরিতার বাবা। বাবার কারণেই দীর্ঘদিন ধরেই শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন এ নারী। তাঁর আরেকটি দাবি, বিশ্বজুড়ে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ। কুরিতা বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র বা যুদ্ধ কখনোই হওয়া উচিত নয়। শান্তির জন্য প্রার্থনা করে গান বাজিয়ে যাচ্ছি।