‘চার বছর আগে অসুখ হয়ে হামার স্বামী মরে গেছে বা। জায়গা জমি কিছু নাই, ঘরবাড়িও নাই। ছলপল নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করবা হইছে। ছলটাক নিয়ে মানষের বাড়িত কাজ করতু; মানষের বাড়িতই থাকতু। এখন পুলিশে একটা বাড়ি করে দিছে হামাক, আর মানষের বাড়িত থাকবা হবে না। এখন থেকে নিজের বাড়িতই ব্যাটাক নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকমু।’
গতকাল রোববার দুপুরে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের জন্য বাংলাদেশ পুলিশের তৈরি ঘর আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের পর আবেগাপ্লুত কণ্ঠে এভাবেই বলছিলেন আকতার বানু।
তিনি নওগাঁর সাপাহার উপজেলার মরাডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুল ওহাবের স্ত্রী। ওই উপজেলাতে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের ঘর উপহার পেয়েছেন।
আকতার বানু বলেন, তাঁর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল নিজের একটা বাড়ি হবে। পারিবারিক ভাবে অসচ্ছল হওয়ায় সেটি করতে পারেননি। এর মধ্যে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তাঁর স্বামী মারা যান। তখন থেকেই তাঁর জীবনে মেনে আসে ঘোর অন্ধকার। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করেছেন তিনি। মুজিববর্ষ উপলক্ষে পুলিশের দেওয়া ঘর পেয়ে এখন ভীষণ খুশি তিনি। সংশ্লিষ্ট সবারর প্রতি জানিয়েছেন কৃতজ্ঞতা।
জানা গেছে, মুজিববর্ষ উদ্যাপনের লক্ষ্যে বছরব্যাপী নানা কর্মপরিকল্পনা নিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সেসব পরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়ায় কিছু অর্থ বেঁচে যায়। সেই অর্থ দিয়ে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আবাসন কার্যক্রমে শামিল হয় বাংলাদেশ পুলিশ। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেশের বিভিন্ন থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সার্ভিস ডেস্ক ও গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত গৃহ হস্তান্তর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানটি সরাসরি থানায় থানায় মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।
এ সময় আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে ভূমিহীন, ছিন্নমূল মানুষকে পুনর্বাসন শুরু করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের ৫২০টি থানায় গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। এসব ঘর উন্নত ও পরিবেশবান্ধব সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে আজ (গতকাল) ৪০০টি ঘর হস্তান্তর করা হচ্ছে।