রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ীতে পাটের সুনাম রয়েছে বহু বছর আগে থেকে। ভালো দাম পাওয়ায় প্রতিবছর বাড়ছে পাটের আবাদ। সেই সঙ্গে পাটকাঠি বিক্রি করে বাড়তি লাভ করছেন কৃষকেরা। সরেজমিন জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকেরা জমি থেকে পাট কেটে ফেলেছেন। সেই পাট পানিতে জাগ দিয়ে আঁশ ছাড়িয়ে নিয়েছেন। এখন চলছে পাটকাঠি শুকানোর কাজ। গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে পাটকাঠি সারি সারি রেখে দিয়েছেন অনেকই। পাটকাঠি শুকানো শেষ হলে অনেক কৃষক বাড়ির আঙিনায় স্তূপ করে রেখে দিচ্ছেন। অনেকেই আবার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এসব পাটকাঠি বরজ, খেতের চারপাশে বেড়া দেওয়া, গরুর ঘর ও রান্নাঘরে বেড়া দেওয়া, জ্বালানিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়।
কালুখালী উপজেলার হরিণবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আকমল হোসেন বলেন, ‘এ বছর পাট নিয়ে আমি চরম ভোগান্তিতে ছিলাম। পানির অভাবে পাট কাটতে পারছিলাম না। এলাকার একজনের পুকুরে জমির পাট জাগ দিয়েছিলাম। অল্প পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের রং ভালো আসেনি। তারপরও ভালো দামে বিক্রি করতে পেরেছি। এখন পাটকাঠি শুকানোর কাজ করছি। কিছু পাটকাঠি নিজের প্রয়োজনের জন্য বাড়িতে সংরক্ষণ করে রেখেছি। বাকি পাটকাঠি বিক্রি করে দিয়েছি। ১০০ আঁটি পাটকাঠি ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
আরেক কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘পাটে মোটামুটি ভালো দাম পেয়েছি। এখন পাটকাঠি বিক্রি করেও ভালো দাম পাচ্ছি। পাটকাঠি হলো কৃষকদের জন্য বাড়তি লাভ। ১ আঁটি পাটকাঠি আমি ৫-৬ টাকায় বিক্রি করতে পারছি।’
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর জেলার পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ৪৯ হাজার ৮০০ ২২ হেক্টরে; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৩২২ হেক্টর বেশি। গত বছর পাট উৎপাদিত হয়েছিল ৬ লাখ ১০ হাজার ৫২২ বেল, এ বছর ৬ লাখ ২০ হাজার বেল।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম শহীদ নূর আকবর বলেন, পাট ও পাটকাঠির ভালো দাম পাওয়ায় প্রতিবছরই এই জেলায় পাটের আবাদ বাড়ছে। এ বছর পাটে বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষকেরা। বৃষ্টি না থাকায় পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কৃষকেরা কিছুটা ভোগান্তিতে ছিলেন। পাটের দাম ভালো পেয়ে খুশি তাঁরা। সেই সঙ্গে পাটকাঠি বিক্রি করে বাড়তি লাভ করছেন এই জেলার কৃষকেরা।