যমুনার পানি বাড়ছেই। সে সঙ্গে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে অপরিকল্পিতভাবে জিও ব্যাগ ফেলায় ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না বলে জানান নদীপারের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। এদিকে চার দিনে যমুনায় পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর গ্রামে অন্তত ১৫ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙনের কবলে রয়েছে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, তাঁত কারখানা ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসী ঘরসহ আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় (গত বুধবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় ১১ সেন্টিমিটার ও কাজীপুর মেঘাইঘাট পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বেড়েছিল।
জালালপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘যমুনা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়। এতে তাঁর ঘর মুহূর্তের মধ্যে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে ভাঙনের তীব্রতা কিছুটা কমছে। এরপরও ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদী পারের মানুষ। তবে ভাঙন ঠেকাতে পরিকল্পিতভাবে বালুভর্তি ব্যাগ ফেলা হচ্ছে না। সে জন্য ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না বলে দাবি তাঁর।’
একই গ্রামের গৃহবধূ সাবিনা খাতুন বলেন, ‘আমার দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। আমাদের নিজস্ব ঘরবাড়ি ছিল। নদীভাঙনে সব হারিয়ে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে ছাপড়া ঘর তুলে বসবাস করছিলাম। যমুনার ভাঙনে সেই প্রতিবেশীর ঘরসহ আমার ছাপড়াও নদীতে বিলীন হয়ে যায়। পরে পাশের বাড়ির আরেক প্রতিবেশীর বাড়িতে কয়েকটি টিন কিনে আবার ছাপড়া তুলে থাকতে শুরু করি। এভাবে কয়েক মাস থাকার পর এই ছাপড়াও কয়েক দিন আগে আগ্রাসী যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে।’
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যমুনা নদীর ভাঙনের কবল থেকে এনায়েতপুর ও শাহজাদপুর এলাকা রক্ষায় প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুড়ী পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। বাঁধের কাজ শেষ হলে এ এলাকায় আর ভাঙন থাকবে না।’