ড. মো. শাহজাহান কবীর
ইসলামে ঘুষের লেনদেন সম্পূর্ণরূপে হারাম। ঘুষ একটি জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার অন্যতম হাতিয়ার। ঘুষের লোভেই মানুষ দুর্নীতিবাজ হয়ে ওঠে। ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে অসহায় মানুষের ওপর অত্যাচারের খড়্গ চালিয়ে দেওয়া হয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ এ-জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘তোমরা পরস্পরে একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনেশুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারকদের ঘুষ দিয়ো না।’ (সুরা বাকারা: ১৮৮)
কারও ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাকে কিছু দেওয়াকে ঘুষ বলা হয়। ঘুষখোররা বিভিন্ন পন্থায় মানুষের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করে থাকে। পার্থক্য হলো, কারও চাওয়ার ধরন ভিক্ষুকের মতো হয়, আবার কেউ মাস্তানদের মতো মানুষকে জিম্মি করে ঘুষের টাকা আদায় করে থাকে। তাই মানুষ বাধ্য হয়ে ঘুষ দিয়ে হলেও কাজ উদ্ধারের বিভিন্ন পন্থা খুঁজতে থাকে। অথচ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘মহানবী (সা.) ঘুষদাতা ও গ্রহীতাকে অভিশাপ দিয়েছেন।’ (আবু দাউদ) অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে দেহ হারাম খাদ্যে বেড়ে ওঠে, তার জন্য জাহান্নামের আগুনই উত্তম।’ (তিরমিজি)
ঘুষখোররা এতটাই নীচ ও জঘন্য হয় যে, তারা তাদের টেবিলে সাধারণ মানুষের ফাইলপত্র ভিক্ষার থালার মতো ফেলে রাখে। যতক্ষণ সেই থালায় ঘুষের টাকা পড়বে না, ততক্ষণ সেই ফাইলের কার্যক্রমও চলবে না। অথচ ইসলামের দৃষ্টিতে এটি জঘন্য খিয়ানত। কিয়ামতের দিন খিয়ানতের বোঝা নিয়েই তাদের ওঠানো হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের ঘুষখোর-দুর্নীতিবাজদের কবল থেকে রক্ষা করুন।
লেখক: চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি