রাজবাড়ী প্রতিনিধি
মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন বন্ধের দাবিতে রাজবাড়ীতে চলছে পরিবহন ধর্মঘট। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের ভরসা এখন তিন চাকার অবৈধ যানবাহন। ভোগান্তির সঙ্গে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের।
সরেজমিন গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে শহরের মুরগির ফার্ম, বড়পুল, শ্রীপুর বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বাসগুলো এক জায়গায় রাখা হয়েছে। মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন বন্ধের দাবিতে পরিবহন ধর্মঘট চললেও সকাল থেকেই রাজবাড়ীর মহাসড়কে চলাচল করছে রিকশা, অটোরিকশা, মাহিন্দ্রাসহ তিন চাকার বিভিন্ন যান। এসব যানবাহনই সাধারণ মানুষের গন্তব্যে যাওয়ার একমাত্র ভরসা। অবৈধ এসব যান মহাসড়কে চলাচল করলেও নেই প্রশাসনের কোনো তৎপরতা।
যাত্রী কামরুননাহার বলেন, ‘সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে বাস বন্ধ থাকায়। ভেঙে ভেঙে দ্বিগুণ ভাড়া বেশি দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। যে কারণে ধর্মঘট চলছে, সেই তিন চাকার যানবাহনই আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ভরসা।’
আরেক যাত্রী মোস্তফা বলেন, ‘ঢাকায় যেতে হবে খুবই জরুরি কাজে। বাড়ি থেকে বের হয়ে জানতে পারি বাস চলছে না। তাই বাধ্য হয়ে ইঞ্জিনচালিত মাহিন্দ্রায় রাজবাড়ী পর্যন্ত এসেছি। এখন আবার মাহিন্দ্রাতেই গোয়ালন্দ ঘাটে যেতে হবে। নদী পার হয়ে যদি বাস পাই, সেই আশায় যাচ্ছি।’
অটোচালক ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘মহাসড়কে দুর্ঘটনা শুধু তিন চাকার যানবাহনের জন্যই হয়, বিষয়টা তা নয়। বাস-ট্রাক ও মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতির কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে। অথচ যত দোষ আমাদের।’
আরেক অটোচালক নাজমুল বলেন, ভাড়া দ্বিগুণ নিচ্ছি না। ৫-১০ টাকা বেশি নিচ্ছি। অপর প্রশ্নের জবাবে বলেন, মহাসড়কে অটো চালাতে ভয় লাগে। কিন্তু তারপরও পেটের দায়ে চালাতে হয়।
বাইপাস সড়ক তো নেই যে সেখানে চালাব।
জানা গেছে, ৭ নভেম্বর ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর চিঠি দিয়ে মহাসড়কে সব ধরনের অবৈধ থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধের বিষয়ে দাবি জানায় ফরিদপুর বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ১০ নভেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে পরদিন সকাল ছয়টা থেকে ১২ নভেম্বর রাত আটটা পর্যন্ত সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হবে। ফরিদপুর বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রাজবাড়ী বাস মালিক সমিতি।
জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণত সম্পাদক মুরাদ হাসান বলেন, মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচলে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে অনেক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা রোধে ও নিরাপদ সড়ক রাখতে অবৈধ যানবাহন বন্ধের জন্য এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।