রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে এক মাসের ব্যবধানে আবারও অগ্নিকাণ্ডে একটি রিসোর্ট পুড়ে গেছে। গত মঙ্গলবার মাঝরাতের দিকে কংলাক পাহাড়ে অবস্থিত রক প্যারাডাইস রিসোর্ট পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আগুনে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে অগ্নিনির্বাপককর্মী। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয় এক যুবকে দায়ী করেছেন পুড়ে যাওয়া রিসোর্টের মালিক ওমর বিঝু।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ঘটনার সময় প্রচণ্ড বাতাস ও পানির সংকট থাকায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এতে রক প্যারাডাইস রিসোর্ট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনীর পাহারায় দীঘিনালা থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট পৌঁছে ১ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফুল ইসলাম আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাত ৩টার দিকে কংলাক পাহাড়ের রক প্যারাডাইস রিসোর্টে আগুন লাগে। পরে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ নুর নবী জানান, আগুনে রক প্যারাডাইস রিসোর্টটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এতে আনুমানিক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পুড়ে যাওয়া রিসোর্টের মালিক ওমর বিঝু দাবি করেন, কংলাকে তাঁর বাকি রিসোর্টগুলো পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য কেরোসিন ছিটানো হয়েছে। আর এর জন্য স্থানীয় যুবক টুপিস ত্রিপুরাকে দায়ী করেছেন তিনি।
রিসোর্ট মালিক বলেন, ‘এক মাস আগে রক প্যারাডাইস রিসোর্টে চুরির দায়ে অভিযুক্ত টুপিস ত্রিপুরাকে গ্রামীণ সালিসের মাধ্যমে এলাকা থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। এখন এলাকায় ফিরে প্রতিহিংসাবশত এমনটি করেছেন।’
এর আগে গত ২ ডিসেম্বর রাতের একই সময় সাজেকে আগুনে তিনটি রিসোর্ট, রেস্টুরেন্টসহ একটি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সাজেক রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জেরী লুসাই বলেন, বারবার আগুনের বিষয়টি দুঃখজনক।
এদিকে সাজেক রইলুই পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আসলাম বলেন, ‘রাতে সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনীসহ আমরা ঘটনা স্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। গতকালের আগুনটি পরিকল্পিতভাবে দেওয়া হয়েছে। আশপাশের চারটি রিসোর্টে কেরোসিন ছিটানো হয়েছে। একটি রিসোর্টের দরজায় আগুন দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া আগুন লাগার ১৫ মিনিট আগে বিদ্যুৎ চলে যাওয়াটাও সন্দেহজনক বিষয়। আমরা রিসোর্টের সিসি টিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখে দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করব।’
সাজেক গ্রামপ্রধান হেডম্যান লালথাংগা লুসাই বলেন, সাজেকের উন্নতি দেখে একটি পক্ষ হিংসাবশে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বর্তমান সরকার সাজেকবাসীর জন্য অনেক কিছু করেছে। সাজেকবাসীকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য কেউ বারবার সাজেকে আগুন দিচ্ছে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরও সজাগ থাকতে হবে।