জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
সিআরবির ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অন্তত ৫ বছর আগে থেকে নিচে নামছে। ফলে রেলওয়ের স্থাপিত নলকূপগুলোয় আর পানি উঠছে না। কিছু কিছু নলকূপ থেকে পানি উঠলেও তাও ঘোলা হওয়ায় পানের অনুপযোগী। ফলে সিআরবিতে পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। মূলত বৃষ্টি না হওয়া ও অপরিকল্পিত সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন ভূগর্ভস্থ পানির স্তরকে নিচে নামিয়ে দিচ্ছে।
সিআরবির গোল চত্বর থেকে রেলওয়ের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যেতে পথে পড়ে মাঝারি ধরনের একটি পাহাড়। গত বৃহস্পতিবার সকালে পানি ভর্তি চারটি কলসি নিয়ে উঠছিল একটি ভ্যান। দুটি বাংলোর বাসিন্দারা কিনে আনেন ওই পানি।
একটি বাংলোর বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলোতে সরবরাহ হওয়া পানি খাওয়া তো দূরের কথা, গোসলেরও অনুপযোগী। তাই একদিন পরপর দুই কলসি পানি বাইরে থেকে কিনে আনতে হয় তাঁদের।
ওই ব্যক্তি এই প্রতিবেদককে একটু অপেক্ষা করতে বলে বাংলোর কল থেকে একটি গ্লাসে করে পানি নিয়ে আসেন। দেখা যায়, পানির রঙ লালচে। গ্লাসের নিচে জমে গেছে আয়রন। তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে আপনি কীভাবে খাবেন? গোসলই-বা করবেন কীভাবে?’
শুধু তিনিই নন, সিআরবিতে থাকা বেশির ভাগ পরিবার ব্যবহারের পানিও ড্রামে ভরে কিনে নিয়ে আসেন। এক কলসি পানির দাম পড়ে ১৫০ টাকা। কিছু স্থানীয় লোক এসব পানি সরবরাহ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুটি গভীর নলকূপ থেকে সিআরবিতে পানি সরবরাহ করা হয়। একটি থেকে যায় ব্যবহারের পানি, অন্যটি থেকে খাবার পানি। ব্যবহারের পানি সরবরাহ করা হয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পাশের একটি নলকূপ থেকে। খাবারের পানি আনা হয় সিআরবির সাত রাস্তার মোড় থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে বাটালী রোডের শহীদ আব্দুর রব কলোনি থেকে।
পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী মো. আবরার হোসেন বলেন, সিআরবি আর পাহাড়তলী মিলে ৮টি সচল গভীর নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি সিআরবি ও চট্টগ্রাম স্টেশন এলাকায়, অন্য চারটি পাহাড়তলীতে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম স্টেশনে একটি অচল হয়ে আছে।
পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. সুবক্তগীন বলেন, ‘আমরা সম্ভাব্যতা যাচাই করেছি। ফয়’স লেক থেকে পানি আনা যাবে। চলতি বছরে কাজ শুরু হবে। আশা করছি, এই বছরের মধ্যে ফয়েজ লেক থেকে পানি সিআরবিতে সরবরাহ করা যাবে। এ ছাড়া সিআরবির নলকূপ থেকেও পানি উঠিয়ে সেসব পানি পরিশুদ্ধ করে সরবরাহ করা যাবে।’