চুয়াডাঙ্গায় গ্রীষ্মের আকর্ষণীয় ফল তাল ও তার কচি কচি শাঁস। তাপপ্রবাহে জেলায় বেড়েছে ফলটির কদর। জেলা শহরের অলিগলিসহ উপজেলাগুলোর বিভিন্ন বাজার এলাকার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে তালশাঁস। জানা গেছে, একটি শাঁস আকারভেদে ৪ থেকে ৫ টাকা এবং একটি তাল ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন স্থানে তালশাঁস বিক্রি হচ্ছে। তালের পসরা নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে এক সময় প্রচুর পরিমাণ তালগাছ দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে তেমন একটা দেখা যায় না। বৃষ্টিপাতের অভাবে এ বছর তালের উৎপাদন কম।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গার শহরের কলেজ রোডে দেখা যায়, পাশাপাশি দুজন বিক্রেতা তাল বিক্রি করছেন। প্রকারভেদে প্রতিটি তাল বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। বিক্রেতারা ধারালো দা দিয়ে কেটে শাঁস তুলে বিক্রি করছেন। একটি তালে সাধারণত তিনটি শাঁস থাকে। আর একটি শাঁস বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৫ টাকায়। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ পিচ তাল বিক্রি হয় বলে একজন বিক্রেতা জানান।
হাটকালুগঞ্জের তাল বিক্রেতা হাতেম আলী জানান, তাঁরা পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে প্রতি পিচ তাল ৬ থেকে ৭ টাকায় কেনেন। অল্প লাভেই তা বিক্রি করেন।
সদর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের আরিফুর রহমান জানান, তাঁদের ১০টি তালগাছ রয়েছে। এ মৌসুমে কাঁচা তাল বিক্রি ভালো টাকা আয়ও হয়েছে তাঁর।
তালশাঁস ক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার তালের শাঁস খেতে ভালো লাগে। কম দামে এত সুন্দর রসালো ফলের প্রাপ্তি কার না ভালো লাগে।’
স্কুলপড়ুয়া সাথী খাতুন বলে, ‘তালের কচি শাঁস খেতে ভালো লাগে।’ তালের শাঁস কিনতে আসা মরিয়ম ও লাকী বেগম জানান, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য তালশাঁস কিনতে এসেছেন।
তালশাঁসের পুষ্টি গুনাগুণ সম্পর্কে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দূর করে। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, এ, বি কমপ্লেক্সসহ নানা ধরনের ভিটামিন রয়েছে। তালে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়।