বটিয়াঘাটায় একটি ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে মাটি দিয়ে ভরাট করে পুকুর দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে এলাকাবাসী বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বটিয়াঘাটা উপজেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাজু ব্রিকস’র মালিক মামুন আল হাসান নাজু বটিয়াঘাটায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের খেজুরতলা মৌজায় খনন করা পুকুর ড্রেজারের (খননযন্ত্র) মাধ্যমে বালু ভরাট করছে। ব্যবসায়ী নাজু’র সঙ্গে বর্তমান গঙ্গারামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম হালদারের যোগসাজশ রয়েছে।
গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম হালদার ও নাজু’র যৌথ উদ্যোগে নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে পাইপ লাইন দিয়ে বালু উত্তোলন করে সরকারি পুকুর ভরাট করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, নাজু ব্রিকসের মালিক নাজু জায়গা জবরদখল করে ইটভাটা করেছেন। নামমাত্র কিছু জায়গা তার নিজের হলেও বাকি ২০-২৫ বিঘা জমি তার নিজের নয়। তিনি জবরদখল করে ইটভাটা করেছেন।
পাশাপাশি সম্প্রতি নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আসলাম হালদার সরকারি পুকুর ভরাটসহ বিভিন্ন নদ নদী থেকে খননযন্ত্রের মাধ্যমে খাল, বিল ও নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চলেছেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট নির্বাহী কাছে অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা যায়। এ বিষয়ে আল মামুন হাসান নাজুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনার সঙ্গে আমি অতি সত্ত্বর যোগাযোগ করছি। পাশাপাশি গঙ্গারামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম হালদার বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। আমি কোনো যন্ত্রের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছি না।
অন্যদিকে খননযন্ত্রের কর্মচারী আলামিন বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আসলাম হালদার ভাই আমাদের এখানে পাঠিয়েছেন। আমরা তার লোক। তার নেতৃত্বেই খাল থেকে বালু উত্তোলন করছি এবং সেই কাদামাটি বালু সরকারি রাস্তার কাজে ব্যবহার করছি।
এ খবর পেয়ে বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় খননযন্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করা হয় এবং যন্ত্রের হ্যান্ডেল সহ বেশ কিছু মালামাল জব্দ করা হয়। বর্তমান মালামাল গুলো সদর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) সৌমিত্র মণ্ডলের কাছে রয়েছে বলে জানা যায়।
সৌমিত্র মণ্ডল এ বিষয়ে বলেন, ইউএনও অফিসের সুজন মেশিনের হ্যান্ডেল আমার কাছে রেখেছেন এবং বলেছেন আমি যখন চাইব তখন দেবেন। তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যান আসলাম হালদারের নেতৃত্বে উক্ত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সেই কাদা মাটি বালু রাস্তার কাজে ব্যবহার করছেন ঠিকাদার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কোন কাজে অনিয়ম দুর্নীতি হতে দেওয়া হবে না। সে যত বড় প্রভাবশালী লোক হোক না কেন। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ড্রেজারের মালামাল জব্দ করা হয়েছে। খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী কে এম তাহমিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।