Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

ফসলি জমির মাটি ইটভাটায়

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি

ফসলি জমির মাটি ইটভাটায়

ঢাকার দোহার উপজেলায় যত্রতত্র গড়ে উঠছে ইটভাটা। আর বেশির ভাগই গড়ে উঠছে ফসলি জমির আশপাশে। এ ছাড়া ইট তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি। এ জন্য উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে আনা হচ্ছে ইটভাটায়।

জানা যায়, উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২০টিরও বেশি ইটভাটা আছে। এসব ভাটায় যাচ্ছে উপজেলার আড়িয়ল বিলের মৌড়া, নারিশা, সুতারপাড়া, জালালপুর, নিকড়ার চক, রসুলপুর চক, মাঝিরকান্দার চক, মাহমুদপুর ইউনিয়নের চক এলাকার দুই ফসলি জমির মাটি।

গতকাল শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, কৃষককে অতিরিক্ত টাকার লোভ দেখিয়ে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাঁদের ভয় দেখিয়ে ভেকু দিয়ে আবাদি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নিচ্ছেন ইটভাটার মালিকেরা। এতে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে। এতে ফসলি জমি নষ্টের কারণে খাদ্যসংকটে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

এদিকে ট্রলি ও ট্রাকে করে এসব মাটি ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। এ কারণে সড়কগুলোও হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত।

উপজেলায় মাহমুদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা নজরুল বলেন, ‘আমাদের বাড়ির সঙ্গে কৃষিজমি; এখানে ধানসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন হতো। কিন্তু এখন লিটন দেওয়ান, সবুজ দেওয়ান, আশরাফ দেওয়ান এই স্থান থেকে মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় বিক্রি করছেন। ফলে আমাদের ঘর ভেঙে যেতে পারে বলে আমরা তাঁদের নিষেধ করেছি, কিন্তু তাঁরা শোনেন না।’

একই বিষয়ে জাহাঙ্গীর ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের এখানকার মহিলা মেম্বার মাকসুদাকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এখান থেকে নদী পর্যন্ত প্রায় পাঁচ একরের মতো কৃষিজমির উপরিভাগ কেটে নিয়ে গেছে। আমরা বাধা দিলেও তাঁরা শুনছেন না।’

একই এলাকার বাসিন্দা বিল্লাল বলেন, ‘গত বছর আমার জমি কেটে নিচ্ছিল ইটভাটায়। আমি তখন পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গতবার অভিযোগ করেছি বলে আমাকে দেখলেই তাঁরা উল্টাপাল্টা কথা বলেন।’

রেহেনুমা নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমার জমির মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করে ফেলেছে। এখন আমার জমি পুকুরে পরিণত হয়েছে। আমি আমার জায়গায় বুঝে পাচ্ছি না। জায়গা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ইউএনওর কাছে দরখাস্ত দিয়েছিলাম, তাতেও কোনো কাজ হয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮, ৯ সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য মাকসুদা বেগমের বাসায় গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে তাঁর মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোহার উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মামুন ইয়াকুব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিষয়, আমাদের না। তবে আমাদের পরামর্শ দেওয়া আছে কোন জমিতে কী করা যাবে, আর কী করা যাবে না।’

কৃষিজমির মাটি কেটে নেওয়ার বিষয়ে এ কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘এতে কৃষিজমি তার উর্বরতা হারাচ্ছে। তবে এই জমি হয়তোবা আবার ঠিক হয়ে যাবে।’

অভিযুক্ত সবুজ দেওয়ান বলেন, ‘আমি মাটি কাটাচ্ছি, তবে আপনি যেটা দেখেছেন সেটা না। আমি আমার জমি ও আমার ভাইয়ের জমি কাটতেছি। আমরা এখানে মাছের খামার করব। এখানে আমাদের দুই ভাইয়ের ২১০ ফুট জমি আছে।’

কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কাটার বিষয় জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘আমরা পুকুর খনন করব, সব মাটি এখানে ধরবে না। তাই আমরা ইটভাটায় বিক্রি করে দিয়েছি। নিচের যে মাটি আছে, সেটা দিয়ে আমরা পাড় বাঁধাই করে পুকুর খনন করব।’

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফজলে রাব্বি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করব। আর যারা অবৈধভাবে মাটি কাটবে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ