মাত্র ১০ টাকায় ভর্তির পর শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে বিনা মূল্যে পোশাক, বইখাতাসহ বিভিন্ন শিক্ষাসামগ্রী। রয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা। এমনই একটি ব্যতিক্রম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আদিনা দরবার শরিফ হেফজুল কোরআন মাদ্রাসা। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার আদিনামুড়া পাহাড়ের চূড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মাদ্রাসাটি। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী করা, সন্তানের শিক্ষাকে অভিভাবকের কাছে সহজলভ্য করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই পাহাড়ের আদিনামুড়ায় অবস্থিত আদিনা মসজিদ ও হযরত শাহ কামাল ইয়েমেনী (র.) মাজার রয়েছে। সেখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় আদিনা দরবার শরিফ হেফজুল কোরআন মাদ্রাসা। আদিনামুড়া পাহাড়ের চূড়ায় ২০১৩ সালে এ মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কিবরিয়া। আদিনামুড়ার মাজার ও মসজিদের সাবেক মোতয়াল্লি খন্দকার মো. মনিরুল ইসলামের অনুরোধে মাদ্রাসা, এতিমখানা ও মুসাফিরখানা কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়।
প্রতিষ্ঠার পর সাবেক মোতয়াল্লি খন্দকার মো. মনিরুল ইসলামের মৃত্যুর পর নানা প্রতিকূলতায় এ মাদ্রাসাটির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পরে চলতি বছরের ১ মার্চ মাদ্রাসাটির কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়। বর্তমানে নুরানি ও হাফেজিয়া শাখার কার্যক্রম চলছে।
নুরানি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতিহা নূরের অভিভাবক সুমি আক্তার বলেন, এ মাদ্রাসায় ১০ টাকায় ভর্তি করা হয়। আরবির পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার সমন্বয় করা হয়েছে। বিনা মূল্যে পোশাক, শিক্ষার সকল সামগ্রীসহ বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। তাই আমার সন্তানকে এখানে ভর্তি করাই।
আরেক শিক্ষার্থী নাফিজা আরার বাবা শিপন খন্দকার বলেন, আরবি শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষা, চিকিৎসাসহ বিনা মূল্যে সকল ব্যবস্থা এ মাদ্রাসায় রয়েছে। সত্যিই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এতে এ অঞ্চলের অভিভাবকেরা বেশ উপকৃত হবেন।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন বলেন, আমরা আরবি, বাংলা, ইংরেজি শিক্ষাদান করে থাকি। প্রতি সপ্তাহে খেলাধুলা, হামদ-নাত প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিচর্যার বিষয়ে বিশেষ তদারকি করা হয়।
আদিনা দরবার শরিফ হেজজুল কোরআন মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ শিক্ষায় একটু উদাসীন। তাদের উজ্জীবিত করতে ১০ টাকার ভর্তি ফরমে ভর্তি করাই। ভর্তির পর বাকি দায়িত্ব আমাদের।