সর্বশেষ জয়টা ১৯৯০ সালে। বছরের হিসাবে ৩১ বছর। বর্তমান আবাহনী দলটার অনেক ফুটবলারের তখন জন্মই হয়নি! চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে হারিয়ে সে বছরই নিজেদের প্রথম স্বাধীনতা কাপের স্বাদ পেয়েছিল আকাশি-নীলরা। দ্বিতীয় শিরোপার স্বাদ পেতে পেতে এর মাঝে কেটে গেছে ৩১ বছর!
২০১৮ সালে ফেডারেশন কাপ জয়ের পর আর এত দিন কোনো শিরোপা জেতা হয়নি দেশের ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি আবাহনীর। চার বছরের শিরোপাখরা আর ৩১ বছর ধরে স্বাধীনতা কাপ জিততে না পারার সব আক্ষেপ মিটে গেল গতকালকের স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে। যাদের কাছে শ্রেষ্ঠত্ব হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ঐতিহ্যবাহী দলটি, সেই বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে দাপুটে ৩-০ গোলের জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা কাপ জিতল মারিও লেমোসের দল।
আবাহনীর জয়ে অবশেষ শিরোপার স্বাদ পেলেন মারিও লেমোস নিজেও। ২০১৮-১৯ মৌসুমে লিগের আগে আবাহনীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম কোনো ফাইনাল জিতলেন পর্তুগিজ কোচ। স্বস্তির আনন্দ নিয়ে তাই বললেন, ‘আমার কাছে বিশেষ এক ট্রফি। যখন আপনি ট্রফি জিতবেন না, তখন অবশ্যই হতাশার। এখন মনে হচ্ছে, আমার কাজ এখন স্বীকৃতি পেল।’ স্বস্তির জয়ের দিন আবাহনী বিদায় দিয়েছে বহুদিনের পরীক্ষিত সৈনিক প্রাণতোষ কুমার দাসকে।
কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে লড়াইটা শুরু হয়েছিল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ দিয়ে। কিন্তু সময় গড়াতে গড়াতে দলের তিন পরীক্ষিত খেলোয়াড় তপু বর্মণ, তারিক কাজী জোনাথন ফার্নান্দেজের অভাবটা টের পেতে শুরু করে বসুন্ধরা। তিনজনকেই এই টুর্নামেন্টে চোটের কারণে হারিয়েছে লিগ চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের ৩০ মিনিটের মধ্যে আবার চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ। ম্যাচ শেষে শিরোপা জিততে না পারায় এই চোটকেই প্রধান খলনায়ক বললেন বসুন্ধরা কোচ অস্কার ব্রুজোন।
বসুন্ধরা খেই হারাতেই দাপট দেখিয়েছে আবাহনী। ৫৪ মিনিটে এসেছে প্রথম গোল। টুর্নামেন্টসেরা রাফায়েল অগুস্তোর রক্ষণচেরা পাসে গোল করেন রাকিব হোসেন। প্রথম গোলের সাত মিনিট বাদে বসুন্ধরাকে ম্যাচে ফেরার রাস্তা বন্ধ করে দেয় রিমন হোসেনের এক ফাউল। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি সায়মুন সানি। ৬৩ মিনিটে স্পটকিক থেকে বল লক্ষ্যভেদ করেন ব্রাজিলিয়ান ডারিলটন গোমেজ।
৭২ মিনিটে তৃতীয় ও শেষ গোলটি করেন এই ডারিলটনই।