Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে পদ্মা সেতু হতো না

শেখ আবু হাসান, খুলনা

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে পদ্মা সেতু হতো না

খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও খুলনা নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে পদ্মা সেতু হতো না। তিনি ছাড়া কারোর পক্ষে এ সেতু করা সম্ভব ছিল না। গত রোববার আজকের পত্রিকাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী জানতে চাইলে মেয়র বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে কিছু বলতে গেলে প্রথমেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা বলতে হয়। তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে এ দেশ স্বাধীন হতো না। তিনি একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছিলেন বলেই আজ পদ্মা সেতুর মতো একটি বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।

পদ্মা সেতুর বিষয়ে সর্বপ্রথম তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালে রূপসা সেতুর কার্যক্রমের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়া পয়েন্টে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

সে সময় মন্ত্রীসহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যদি এই সেতুর কাজ শুরু করতে পারি, তাহলে আগামী ২০০৭ সালের মধ্যে এই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি।’

সে সময় যারা (বিএনপি-জামাত জোট সরকার) ক্ষমতায় এসেছিল, তারা এই সেতুর ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করে। তারা যাতে এই সেতু না হয়, সে জন্য তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রীর মাধ্যমে সেতুর স্থান পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছিল। এই ঘটনায় খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় সব রাজনৈতিক দল ও সচেতন মানুষ আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের একপর্যায়ে মাওয়া ও জাজিরা পয়েন্টে বিশাল মানববন্ধন হয়। আন্দোলনের কারণে তখন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বলে পদ্মা সেতু হবে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। তারা সেতু বাস্তবায়নের জন্য কোনো কার্যক্রম শুরু করেনি।

পরবর্তীতে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর পদ্মা সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেন। সে সময় তিনি বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার সঙ্গে আলাপ করলে, তারা এই সেতুতে অর্থ জোগান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরই একপর্যায়ে হঠাৎ বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থ দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। পদ্মা সেতু যাতে না হতে পারে, সে জন্য বিশ্বব্যাংকসহ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়। একপর্যায় কানাডার এক আদালতে দুর্নীতির একটি মামলাও হয়। সে মামলায় এই প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়নি বলে আদালত রায় দেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সিদ্ধান্ত হয়, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। ২০১২ সালে এই সেতু হবে বলে ঘোষণা করা হয়। সে সময় অনেকেই এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি। অনেক অর্থনীতিবিদ, পণ্ডিত বলেছিলেন, এই সেতু করা সম্ভব না। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটা করে দেখিয়েছেন। দেশপ্রেম ও জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকলে অনেক কিছু করা সম্ভব। নতুন করে আবার ২০১৫ সালে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩ কোটি মানুষের দীর্ঘ প্রত্যাশিত স্বপ্ন সেই পদ্মা সেতু আজ বাস্তবায়ন হয়েছে। এই সেতু যে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কী প্রয়োজন তা আর ভাষায় বলে শেষ করা যাবে না।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন 

পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলের অর্থনীতি, শিল্প ও বাণিজ্যে ব্যাপক গতিশীলতার সৃষ্টি হবে। এ অঞ্চলের মানুষসহ দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। এ অঞ্চলের দুটি বন্দর মোংলা ও পায়রা আরও গতিশীল হবে। বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে মোংলা বন্দর অচল করে দেওয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনার সরকার এসে মোংলা বন্দরকে আধুনিকায়ন করেছে, ইপিজেড করেছে।

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ