জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ইতিমধ্যে বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। কোনো কোনো পরিবহনে ৪০-৫০ শতাংশও বেড়েছে। এ নিয়ে গতকাল রোববার সভা করেছে বিভিন্ন বাসমালিক সমিতি। ভাড়া বাড়ানোয় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। এদিকে অতিরিক্ত ভাড়া পরিশোধের সময় বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে:
বান্দরবান: বান্দরবান-ঢাকা শীতাতপ (এসি) বাসে ২০০ টাকা, নন-এসিতে ১০০ টাকা, বান্দরবান-চট্টগ্রাম রুটে নন-এসিতে ৩০ টাকা, বান্দরবান-রাঙামাটি রুটে ৩০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া জেলা সড়কগুলোতেও ১৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। তবে ঢাকা ছাড়া অন্য সড়কে বাসভাড়া আজ সোমবার থেকে কার্যকর হবে।
এদিকে বান্দরবান-রাঙামাটি ও জেলার অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বাস মালিকদের সংগঠন বান্দরবান মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আলম বলেন, বান্দরবান-রাঙামাটি রুটে প্রতিজনে ভাড়া ১৫০ টাকা থেকে ৩০ টাকা বাড়িয়ে বর্তমানে ভাড়া ১৮০ টাকা করা হয়।
বান্দরবান মোটর মালিক সমিতির সিনিয়র সভাপতি মো. জাফর বলেন, বান্দরবান-রাঙামাটি ও জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কে পুবালী, সুগন্ধা এবং পাহাড়িকা বাসমালিকদের তিনটি সমিতি থাকলেও তিনটি সমিতি বান্দরবান মোটর মালিক সমিতি নামে পরিচালিত হয়। এ ছাড়া জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে বাসভাড়াও বাড়ানোর দাবি ওঠে। গতকাল জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে বাসমালিকদের বৈঠক করার কথা ছিল। তবে অনিবার্য কারণে সে বৈঠক হয়নি। বাসমালিকেরা বলেছেন, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আজ সোমবার বাসমালিক সমিতির বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাঙামাটি: শহরে অটোরিকশার ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অটোরিকশার মালিক-চালক নেতাদের নিয়ে এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
এতে তবলছড়ি থেকে বনরুপা ১৫ টাকা, তবলছড়ি থেকে রিজার্ভ বাজার ১৫, তবলছড়ি থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ১০, বনরুপা থেকে ভেদভেদী ১৫, তবলছড়ি থেকে ভেদভেদী ৩০, রিজার্ভ বাজার থেকে ভেদভেদী ৩০ টাকা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মামুন মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, বিআরটি এ কর্মকর্তা, প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, সিএনজি চালক সমিতির সভাপতি পরেশ মজুমদারসহ অনেকে।
মানিকছড়ি: পাহাড়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রধান বাহন মোটরসাইকেল চালকেরা গড়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করায় খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় গত দুই দিনে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ জনপদের বাসিন্দারা।
উপজেলার সাপ্তাহিক হাট গত শনিবার ও সরকারি অফিস-আদালত খোলার প্রথম দিন গতকাল রোববার ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ বাজার ও চাকরিমুখী হন। কিন্তু মোটরসাইকেলে বসে গন্তব্যে গিয়ে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া পরিশোধে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা।
সদর বাজারে আসা রুস্তম আলী বলেন, আগে ১২ থেকে ১৩ কিলোমিটার রাস্তা আসতে মোটরসাইকেল ভাড়া ছিল জনপ্রতি ১০০ টাকা। এখন হঠাৎ তা ১৫০ টাকা নিচ্ছে।
আমেনা আক্তার ও আবদুল করিম বলেন, ‘মোটরসাইকেল চালকেরা আকস্মিক ৪০-৫০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে আমাদের বিপাকে ফেলেছেন। তেলের দাম বাড়লেও ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গণমানুষের সহনীয় পর্যায়ে ভাড়া নির্ধারণ করলে মানুষের ভোগান্তি কমবে।’
মানিকছড়ি-চেঙ্গুছড়া সড়কের মোটরসাইকেল চালক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. পারভেজ হোসেন বলেন, হঠাৎ তেলের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় অনেকে অপরিকল্পিতভাবে ভাড়া বাড়িয়েছেন। আমরা দুই-এক দিনের মধ্যে আলোচনা করে ভাড়া নির্ধারণ করে দেব।