কারাগারে বসে জঙ্গিবাদের হাতেখড়ি আবদুল্লাহ আল নোমান ওরফে আবু বাছিরের। সেখান থেকেই নব্য জেএমবির প্রধান মাহাদী হাসান জনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তুরস্কের ইস্তাম্বুল থেকে মাহাদীর নির্দেশনায় আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন কুমিল্লার এই কলেজছাত্র। এক বছর পর জেল থেকে বের হয়েই পল্টনে পুলিশ চেকপোস্টে বোমা হামলা চালান তিনি।
কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) কর্মকর্তারা বলছেন, বাছির নব্য জেএমবির প্রথম ‘রিমোট কন্ট্রোল জেহাদি’। তিনি জঙ্গিবাদের দীক্ষা, হামলার কাজে বাসাভাড়া, হাতে তৈরি বোমা (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস-আইইডি) তৈরি, জায়গা রেকিসহ সব কাজ অনলাইনে পাওয়া নির্দেশনায় বাস্তবায়ন করতেন।
গত বুধবার মিরপুর মাজার রোড এলাকা থেকে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার এই কমান্ডার আবু বাছিরকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি।
সিটিটিসির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) রহমত উল্লাহ চৌধুরী সুমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইইডি তৈরির জন্য সংগঠনের কাছে থেকে বাছির পেয়েছিলেন পাঁচ হাজার টাকা। মোবাইল লাইভে সংগঠনের অন্য সদস্যের কাছ থেকে আইইডি বানানো শেখেন তিনি। পরে সরঞ্জাম কিনে চার দিন সময় নিয়ে বোমাটি বানিয়ে পল্টন ট্রাফিক বক্সে রেখে আসেন। পুরো কাজ তিনি একাই করেছেন। এই ধরনের জঙ্গিরা পুলিশের কাছে ‘রিমোট কন্ট্রোল জেহাদি’ হিসেবে পরিচিত।
গতকাল বৃহস্পতিবার মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত বছরের ২৪ জুলাই রাতে পল্টনের পুলিশ চেকপোস্টে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন এই আবু বাছির। ২০১৭ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে দাওয়াত পেয়ে নব্য জেএমবিতে যোগ দেন তিনি। পরে ফেসবুকে সদস্য সংগ্রহসহ উগ্রবাদী কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে ২০১৮ সালে সিটিটিসি তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তিন মাস পরে জামিনে মুক্ত হয়ে আবার তিনি নব্য জেএমবিতে সক্রিয় হন।
সিটিটিসির প্রধান বলেন, গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার লাঙ্গলকোটে একটি কলেজে পড়াশোনা করতেন বাছির। কারামুক্ত হয়ে সংগঠনের অন্য সদস্য আবু মোহাম্মদের সহায়তায় রাজধানীর মান্ডা এলাকায় এক রুমের বাসা ভাড়া নেন। আবু মোহাম্মদই তাঁকে আইইডি বানানোর ভিডিও টেলিগ্রাম অ্যাপসের মাধ্যমে পাঠান।
কারাগারে বসে কীভাবে জঙ্গিবাদে জড়ান এমন প্রশ্নে সিটিটিসির প্রধান বলেন, কারাগারে তাঁদের নজরদারি নেই। তবে কারাগারে নজরদারির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পুলিশ চিঠি দিয়েছে।