জন্মসূত্রে রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন (৪৮)। স্থানীয় তেঁতুলতলা মাঠ প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমরা এই মাঠে খেলাধুলা করে বড় হয়েছি। এখন আমাদের সন্তানেরা খেলছে। সেই মাঠ দখল করে কলাবাগান থানার ভবন বানানোর পাঁয়তারা চলছে। অথচ মাঠ না থাকলে এই শহরে আমাদের সন্তানেরা খেলাধুলার সুযোগ পাবে না। এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।’
শুধু মোশাররফ নন, তেঁতুলতলা মাঠে থানার ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না কলাবাগান এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা। তাই মাঠ রক্ষার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। ‘তেঁতুলতলা মাঠ আমাদের প্রাণের দাবি’ ব্যানারে তারা পালন করছেন নানা কর্মসূচি।
এর অংশ হিসেবে গতকাল বিকেলে পশ্চিম পান্থপথে স্কয়ার হাসপাতালসংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন করেছেন তারা। স্থানীয় শিশু-কিশোর ও অভিভাবকেরা এতে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে একটি মিছিল বের করা হয়।
আন্দোলনের সমন্বয়ক সৈয়দা রত্না বলেন, ‘তেঁতুলতলা মাঠটি বৃহত্তর কলাবাগান এলাকার একমাত্র মাঠ। এখানে সারা বছর শিশু-কিশোরেরা খেলাধুলা করে। এ ছাড়া লাশের গোসল, জানাজাসহ নানা সামাজিক কাজেও মাঠটি ব্যবহার করা হয়। এই মাঠ আমরা হারাতে চাই না।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তেঁতুলতলা মাঠটি মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময় থেকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০২০ সালের দিকে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা না করেই ওই মাঠে ‘কলাবাগান থানার জন্য নির্ধারিত স্থান’ লেখা সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়।
স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে তখন সাইনবোর্ড খুলে ফেলা হলেও চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি কাটাতাঁরের বেড়া দিয়ে মাঠ ঘিরে দেওয়া হয়। তখন থেকে রুটিন করে মাঠ পাহারা দিচ্ছেন কলাবাগান থানার কয়েকজন পুলিশ। ওই মাঠে খেলতে যাওয়ায় চলতি মাসের শুরুর দিকে স্থানীয় কয়েকজন শিশুকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ ওঠে পাহারায় থাকা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারও করা হয়।