ছোট্ট নদীটির বেশ সুন্দর নাম, মাটিকাটা। আর তার ওপর যে সেতুটি আছে তার নামও মন্দ নয়, চৌধুরীঘাট বেইলি ব্রিজ। কিন্তু কিছুদিন পরপর সেতুটি দেবে যাচ্ছে। এ নিয়ে কতবার দেবে গেল তার হিসাব রাখা আশপাশের মানুষের জন্য বেশ মুশকিল হয়ে উঠেছে। এরপরও তাদের যাতায়াতের যে এটাই একমাত্র পথ, তাই কষ্ট করে হলেও তারা হিসাব রেখেছে। গুনে গুনে তারা জানায়, এ নিয়ে ২২ বার হলো।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের চৌধুরীঘাট এলাকায় এই সেতুটি। শ্রীপুরের পাশাপাশি পাশের ময়মনসিংহের দুই উপজেলা গফরগাঁও এবং ভালুকার কয়েক লাখ মানুষ যাতায়াত করে এই সেতুর ওপর দিয়ে। বারবার এটি দেবে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। এরপর এ পর্যন্ত স্থায়ী সমাধান বা নতুন একটি সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করে চলছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর মাঝ বরাবর পাটাতন দেবে অনেক
নিচে চলে গেছে। বিপদ এড়াতে সেতুর দুই প্রান্তে পুঁতে রাখা হয়েছে লাল নিশান। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন গ্রাম পুলিশের এক সদস্য। ঝুঁকি নিয়ে চলছে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। ভারী যানবাহন চলাচলে বাধা দিচ্ছে গ্রাম পুলিশ। অনেক অটোরিকশাচালক পারাপারের সময় যাত্রী নামিয়ে দিয়ে পার হচ্ছে।
যানবাহন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা গ্রাম পুলিশ আব্দুর রশিদ বলেন, ভারী যানবাহনগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ‘২২ মার্চ মঙ্গলবার রাতে আস্তে আস্তে দেবে যেতে শুরু হয় ব্রিজটি। বর্তমানে আরও বেশি দেবে গেছে। এ নিয়ে মোট ২২ বার এমন ঘটনা ঘটল।’
অটোরিকশাচালক মো. লাল মিয়া বলেন, বেশ কয়েকবার বেইলি ব্রিজটি ভেঙে গেলেও স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। এই ব্রিজটি অচল হয়ে গেলে প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে আমাদের চলাচল করতে হবে।’
কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল হক বলেন, আপাতত দ্রুত সংস্কার করে যান চলাচলের উপযোগী করতে বলা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে স্থায়ীভাবে সমাধান করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা প্রকৌশলী এ জেড এম রফিকুল আহসান বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বেইলি সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এক দিন সময় লাগতে পারে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই নদীর ওপর একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।