নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
যোগাযোগ, জ্বালানি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকেপ্রাধান্য দিয়ে আগামী অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন খাতে ২ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা সংস্থান রাখার কথা বলা হয়েছে। এর প্রায় পুরোটাই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় বরাদ্দ থাকবে। বড় অঙ্কের টাকা পেয়েছে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল ও পদ্মা রেলসেতুর মতো মেগা প্রকল্প। তবে শেষের দিকে থাকা পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যে বাজেট উপস্থাপন করেছেন, তাতে এডিপির আওতায় রাখা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব কোষাগার থেকে এবং ৯৪ হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার ঋণ থেকে নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
যদিও এর বাইরে বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনগুলোও তাদের নিজস্ব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ১১ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা ব্যয় করবে। সেগুলো হিসাব করলে এডিপির আকার দাঁড়াবে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। এডিপির বাইরে বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পে ৭ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে। এ ছাড়া উন্নয়ন স্কিমের আওতায় ৩ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা এবং কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে আরও ২ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
জানা গেছে, উন্নয়ন বাজেট বা এডিপির সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৪৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা, শিক্ষা খাতে ২৯ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা, গৃহায়ণ খাতে ২৭ হাজার ৪৬ কোটি টাকা, স্বাস্থ্যে ১৮ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১৬ হাজার ২০৪ কোটি টাকা, কৃষিতে ১০ হাজার ৭০৭ কোটি, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদের জন্য ৮ হাজার ৯৯৫ কোটি, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবায় ৫ হাজার ৩৬২ কোটি, জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় ৩ হাজার ৪৩৬ কোটি, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা খরচ হবে।
এডিপির মধ্যে মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ রয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে বেশি ৯ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা অর্থ পাচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে মাতারবাড়ী আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্প (১ম সংশোষিত)। এই প্রকল্পে বরাদ্দ প্রায় ৯ হাজার ৮১ কোটি টাকা। ৮ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪)। ৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প। পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ রয়েছে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
দেশের প্রধান বিমানবন্দর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (১ম পর্যায়) প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। ফিজিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট (পিএফডি) প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-১) প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা আর ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৬) প্রকল্প বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা।