মো. শামীম হোসেন, পাংশা (রাজবাড়ী)
জন্মনিবন্ধন জটিলতায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাসিন্দারা। নতুন নিবন্ধন ও সংশোধনীর আবেদন করে মাসের পর মাস ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদে ঘুরছেন মানুষ। তবুও মিলছে না জন্মনিবন্ধন সনদ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলার আড়াই হাজারের অধিক পরিবার। এই জন্মনিবন্ধন এখন রীতিমতো গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের। বিড়ম্বনায় পড়ছেন ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও (সচিব)।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে জানা গেছে, আগে জন্মনিবন্ধন করা হলেও সেটি অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন করে নিবন্ধন করাতে হচ্ছে। সন্তানদের জন্মনিবন্ধন করাতে গিয়ে বাবা-মায়ের জন্মসনদ তৈরি, সংশোধন করতে হচ্ছে। কারও বাংলায় সনদ থাকলেও ইংরেজিতে নেই, ইংরেজি থাকলেও বাংলা করা নেই। বর্তমান জন্মনিবন্ধন পদ্ধতি নিয়ে ধারণার অভাব ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র জোগাড় করতে না পারাসহ নানা সমস্যায় ঘুরপাক খাচ্ছেন জন্মসনদ করতে যাওয়া ব্যক্তিরা।
এ সময় একাধিক ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অনেক নতুন ও সংশোধনী জন্মনিবন্ধনের আবেদন করা হয়েছে। আবেদনগুলো অনুমোদন দেননি সাবেক ইউএনও মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী। তিনি জন্মনিবন্ধনের কোনো কাজই করতেন না। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার ৬১২টি জন্মনিবন্ধনের আবেদন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি ১১ সেপ্টেম্বর বদলি হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় গেছেন।
জন্মনিবন্ধন জটিলতায় সরিষা ইউনিয়ন থেকে আসা বহলাডাঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. রিফাত হোসেন বলে, ‘নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আমার জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করতে দিয়েছি প্রায় দুই মাস হয়েছে। দুই মাসে ৬-৭ বার উপজেলায় এসেছি। এখন পর্যন্ত আমার নিবন্ধন হয়নি।’
রিয়া খাতুন নামের এক নারী বলেন, ‘আমার ছেলের স্কুলে ভর্তির জন্য জন্মনিবন্ধন করতে হবে। ছেলের নিবন্ধন করতে গিয়ে জানতে পারি ছেলের বাবার জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করতে হবে। পরে ছেলের বাবার জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করতে দিয়েছি প্রায় ১০ দিন। এখনো হয়নি।’
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মো. মাসুদুর রহমান রুবেল বলেন, ‘ইউএনওদের এখন অনেক দায়িত্ব। যে কাজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা প্রয়োজন, সে কাজগুলো আগে করছি। এরপরে যখন সময় পাচ্ছি তখন জন্মনিবন্ধনের কাজ করছি। বিষয়টি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা সম্ভব। পরবর্তী ইউএনও এলে তিনি বিষয়টি দেখবেন।’