Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

‘রুই-কার্পের বদলে পাঙাশ সঙ্গে মোটা চালের ভাত’

শিমুল দেব, উলিপুর (কুড়িগ্রাম)

‘রুই-কার্পের বদলে পাঙাশ সঙ্গে মোটা চালের ভাত’

‘পাঙাশ মাছ তো খাওয়া চলে না, তা-ও কষ্ট করি খাবানছি। পাঁচ দিন ভর্তি আছি, খালি এক দিন মুরগির গোশত দিছে, তা-ও ব্রয়লার। আর বাকি দিনগুলা পাঙাশ মাছ।’ এসব কথা বলেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগী আজাহার আলী (৬৫)।

৫০ শয্যাবিশিষ্ট উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। রুই ও কার্প মাছের পরিবর্তে পাঙাশ মাছ এবং মালভোগের পরিবর্তে চিনি চম্পা কলা, চিকনের পরিবর্তে মোটা চালের ভাত রোগীদের সরবরাহ করা হয়। একজন রোগীর জন্য প্রতিদিন খাবারের ১৭৫ টাকা বরাদ্দ থাকলেও নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করায় তা মুখে নিতে পারেন না রোগীরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, দরপত্র অনুযায়ী একজন রোগীর জন্য প্রতিদিন সকালে একটি রুটি, একটি মালভোগ কলা, একটি ডিম ও ২৫ গ্রাম চিনির জন্য মোট ৩৬ টাকা ২৫ পয়সার বরাদ্দ রয়েছে। এ ছাড়া দুপুর ও রাতে চিকন চালের ভাত, কার্প বা রুই মাছ, খাসি বা ব্রয়লার মুরগির মাংস, মুগ ডাল, ফুলকপি, গোল আলু, শিম, পটোলসহ মোট ১৭৫ টাকার বরাদ্দ রয়েছে। প্রায় ছয় বছর ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের খাবার সরবরাহ করে আসছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শাহীনুর আলমগীরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স অন্বেষা ট্রেডার্স।

গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, দুপুরে ভর্তি হওয়া রোগীদের খাবার বিতরণ করছেন মমতাজ খাতুন নামের একজন নারী। দুপুরে খাবারে রয়েছে পাঙাশ মাছের তরকারি ও মোটা চালের ভাত। মমতাজ বলেন, ‘শনি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার মাংসের তরকারি দেওয়া হয়। অন্য দিন মাছ দেওয়া হয়। ঠিকাদারের লোক আমাকে যা এনে দেন, আমি তা-ই রান্না করে সরবরাহ করি।’


মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা মমতাজ বেগম বলেন, ‘এত মোটা চালের ভাত খাওয়া খুবই কষ্টকর। গলায় আটকায় যায়। তরকারির মান খুবই খারাপ। পাঁচ দিন ধরে ভর্তি রয়েছি। এক দিন ব্রয়লার মুরগির মাংস দেওয়া হয়েছে। অন্য দিনগুলোতে শুধু পাঙাশ মাছ।’

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগী বাবলু মিয়া, ফুলবাবু ও আবুল কাশেম বলেন, ‘সকালে সামান্য পরিমাণ চিড়া, একটি ডিম ও এটি চিনি চম্পা দেওয়া হয়। দুপুরে বড় বড় আলুর তরকারির সঙ্গে পাঙাশ মাছ ও মোটা চালের ভাত। তরকারিতে মাছের গন্ধ লেগেই থাকে। ডাল ও ভাজির ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। আর যে মোটা চালের ভাত দেওয়া হয়, তা অনেকেই খেতে পারেন না। দুপুরে ও রাতে একই খাবার দেওয়া হয়। তাই অনেকেই হাসপাতালের খাবার না নিয়ে বাহির থেকে খাবার কিনে আনেন।’

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শাহীনুর আলমগীর বলেন, ‘হাসপাতালে কী খাবার দেওয়া হচ্ছে, তা আমার জানা নেই। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেশকাতুল আবেদ বলেন, ‘হাসপাতালের খাবার সরবরাহ নিয়ে প্রশ্ন থাকায় বিষয়টি দেখাশোনার জন্য আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাকে (আরএমও) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি ভালো বলতে পারবেন।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও মাঈদুল ইসলাম ঠিকাদার কর্তৃক রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’ 

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ