দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ব্রি হোল ফিড কম্বাইনড হারভেস্টার কৃষকদের আশার আলো দেখাচ্ছে। দেশের যেকোনো জমির ধান ও গম এটি দিয়ে কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করা যাবে। এই হারভেস্টারে কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পারবে কৃষক।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের লক্ষ্যে খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ (এসএফএমআরএ)’ প্রকল্পের পরিচালক এ কে এম সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে বিজ্ঞানীরা কম্বাইন্ড হারভেস্টারের প্রথম কাঠামো তৈরি করেন। যন্ত্রটি তৈরির পর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার রশিদপুর গ্রামে গত শনিবার প্রথম মাঠ প্রদর্শনী হয়।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, স্থানীয় কাঁচামাল দিয়ে কৃষিযন্ত্র প্রস্তুতকারকদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে ব্রি হোল ফিড কম্বাইন্ড হারভেস্টার। ইঞ্জিন বাদে সব যন্ত্রাংশ স্থানীয় ওয়ার্কশপে তৈরি করা যায়। এই কম্বাইন্ড হারভেস্টারটি দেশে উৎপাদনে সরকারি নীতি ও আর্থিক সহায়তায় পেলে কৃষি যন্ত্রপাতির অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাবে, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে, আমদানিনির্ভরতা হ্রাস করবে।বিদেশে রপ্তানি করা যাবে এবং খুচরা যন্ত্রাংশ প্রস্তুতের বাজার তৈরি হবে।
এসএফএমআরএ প্রকল্পের পরিচালক এ কে এম সাইফুল ইসলাম পরিচালক বলেন, ‘আমদানি করা কম্বাইন্ড হারভেস্টারগুলো আমাদের ছোট জমিতে ভালো কাজ করে না, মূল্য অনেক বেশি। ১৯টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে ব্রি হোল ফিড কম্বাইন্ড হারভেস্টারটি দেশীয় জমির উপযোগী করে প্রস্তুত করা হয়েছে। কৃষকের ছোট ও কর্দমাক্ত জমি বিশেষ করে হাওর এলাকার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে।তবে অন্য এলাকাতেও এটি দিয়ে কাজ করা যাবে। আমদানি করা কম্বাইন্ড হারভেস্টারের তুলনায় এর মূল্য প্রায় অর্ধেক।’
সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, এটি দিয়ে গম কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াইয়ের কাজ করা যাবে। এটির কাজ করার ক্ষমতা ঘণ্টায় এক একরের বেশি। জ্বালানি খরচ একরপ্রতি ১০ লিটার এবং ফসল ক্ষয়ের পরিমাণও শতকরা একভাগেরও কম। উঁচু-নিচু ও কাদা জমিতে যন্ত্রটি সহজে চালনার সুবিধা রাখা হয়েছে। সাধারণ ট্রাকে পরিবহন উপযোগী।