ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে ঘুষ না দেওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক এবং তাঁর দুই সন্তানকে লাঞ্ছিত করে ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষক হেলেনা বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। হেলেনা ওই উপজেলার পূর্ব বাঞ্ছারামপুর এলাকার বাসিন্দা।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হেলেনা বেগম বাঞ্ছারামপুর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যান তিনি। ৭ মার্চ সোনালী ব্যাংকের বাঞ্ছারামপুর বাজার শাখায় ১৫ লাখ টাকার দুটি পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলে বিশাল নামে ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের একটি তালিকা দিয়ে ১৫ মার্চ তাঁকে ব্যাংকে যেতে বলেন। ১৫ মার্চ তিনি ব্যাংকে গেলে ২২ মার্চ যেতে বলা হয় এবং ‘কিছু খরচপাতি’ লাগবে বলে জানান। বিষয়টি জানতে পেরে ১৫ মার্চ বিকেলে হেলেনার বড় ছেলে সৈয়দ ওসমান গণি ব্যাংকে গিয়ে বিশালের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে ৫ হাজার টাকা লাগবে এবং ২২ মার্চের আগে ব্যাংকের পিয়ন কাদিরের সঙ্গে দেখা করতে বলেন বিশাল; কিন্তু ওসমান এতে রাজি হননি।
গত মঙ্গলবার সকালে হেলেনা তাঁর ছোট ছেলে সৈয়দ ইফতেখার রসুল ও বড় মেয়ে সৈয়দা ইসরাত জাহানকে নিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবার ব্যাংকে যান পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে। কিন্তু বিশাল পেনশনার সঞ্চয়পত্র দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় হেলেনার দুই সন্তান এর প্রতিবাদ করলে হেলেনার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন বিশাল। পরে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শফিকুল আলম তাঁদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ব্যাংক থেকে বের করে দিতে বলেন।
তবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে সোনালী ব্যাংকের বাঞ্ছারামপুর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক শহিদুল আলম বলেন, পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে তাঁদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ঘাটতি ছিল। বিষয়টি বলার পর ওই শিক্ষিকার ছেলে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তখন তাঁকে ব্যাংক থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিল।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা শমসাদ বেগম বলেন, অভিযোগের বিষয়টির তদন্তের পর সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।