আসছে বিজয় দিবস। দেশজুড়ে একটা উৎসবের আমেজ থাকবে। উৎসবের এই উচ্ছ্বাস শুধু মন নয়, ঘরবাড়ি, পোশাক-পরিচ্ছদ ও সাজগোজও রাঙিয়ে দেবে।
এ দিনে ঘোরাঘুরির আগে ঠিক করে নিতে হবে, ঠিক কেমন করে কাটাতে চাই দিনটি। দল বেঁধে দূরে কোথাও যেতে চাইলে কিংবা কাছাকাছি এদিক-ওদিক ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখতে হলে সাজের ধরনেও আসবে ভিন্নতা।
সাজ তো কেবল পোশাক নয়, এর সঙ্গে থাকে আনুষঙ্গিক আরও অনেক কিছুর সমন্বয়। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গয়না, চোখের সাজ, মুখের সাজ, চুলের সাজ; বাদ যায় না হাতে বা কাঁধে বহনের ব্যাগটিও। তাই একটু ভেবেচিন্তে পরিকল্পনা করে নিলে সাজ ও ঘোরাঘুরির আনন্দ হবে ঠিকঠাক।
বিজয় দিবসের দিনটিতে সাজ কেমন হলে ভালো হয়—এ নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন পারসোনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রূপ বিশেষজ্ঞ নুজহাত খান দিশা। তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবস আমাদের জীবনে বিশেষ দিন। এর পোশাকের রংও হয়ে থাকে লাল-সবুজ—পতাকা ও বাংলা প্রকৃতির চিরচেনা রং। তাই সাজটিও হতে হবে স্নিগ্ধ। এ সময় আবার প্রকৃতিতে থাকবে একটু হিম হিম ভাব।
তাই সাজের অনুষঙ্গও নির্বাচন করা উচিত আর্দ্রতা ধরে রেখে দিনভর প্রাণবন্ত রাখে, এমন কিছু।’
এবার হালকা ফেস পাউডার লাগিয়ে তার ওপর পিচ বা গোলাপি ব্লাশন বুলিয়ে নিলেই ত্বকের সাজ হয়ে গেল।
চোখে গাঢ় করে ওয়াটারপ্রুফ কাজল, পোশাক যেহেতু লাল-সবুজ তাই ঠোঁটে গাঢ় রঙের লিপস্টিক ব্যবহার না করে ন্যুড বা হালকা রঙের লিপস্টিক পরে নিলে ভালো দেখাবে। আর চুলে হাতখোঁপায় গুঁজে দেওয়া যেতে পারে তাজা ফুল একগুচ্ছ কিংবা বড় আকারের চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, জারবেরার মতো ফুল। বেণিতে ব্যবহার করা যেতে পারে রজনীগন্ধার মালা, গাজরা, চন্দ্রমল্লিকা, বেলি ফুলের মালা কিংবা গোলাপ। পনিটেইল অথবা ফ্রেঞ্চ বেণি করে নিলেও ভালো লাগবে।
শাড়ি, চুড়ি, টিপের মায়ার সঙ্গে হাতে, গালে, গলায় বা বাহুতে এঁকে নিতে পারেন আলপনার নকশা। এতে সাজ পাবে ভিন্ন মাত্রা। আবার রাতে কোথাও কোনো অনুষ্ঠানে যেতে হলে সাজে ভারী ভাব আনা যেতে পারে। তখন পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করে শ্যাডো, চোখের পাপড়িতে মাসকারা, লিপস্টিকে গোলাপি রং কিংবা বাদামি, লাল, কমলা রঙের শেড হলে বেশ মানাবে।
‘বিজয় দিবসের পোশাকের রং লাল-সবুজ। সবুজ রংটাকে বেছে নেওয়া যেতে পারে পোশাক হিসেবে, তাতে থাকতে পারে লালের নানা রকম নকশা। এসব নকশায় আসতে পারে দেশীয় আলপনা, বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি, ইতিহাস-ঐতিহ্যের ছাপচিত্র, জাতীয় ফুল কিংবা জাতীয় পাখি, লতাপাতাসহ নানা রকম দেশীয় আবহ।’ বলছিলেন সেইলরের ডিজাইনার শায়লা নূর। এসব পোশাকের মধ্যে শাড়ি, কুর্তি, সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট, টপ, পাঞ্জাবি, টি-শার্টই হয়ে উঠবে একখণ্ড বাংলাদেশের ক্যানভাস।
রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস বললেন, ‘শীতের হিম ভাবকেও প্রাধান্য দেওয়া উচিত আসছে বিজয় দিবসে। আর তাই পোশাকটি হওয়া উচিত আরামদায়ক এবং হালকা শীতকে এড়ানো যায়—এমন কাপড়ের পোশাক।’ এ জন্য রঙ বাংলাদেশ তাদের পোশাক-সম্ভারে বেছে নিয়েছে কটন কাপড়। আর নকশায় প্রাধান্য পেয়েছে চিরায়ত গ্রামবাংলার আলপনা। এসব নকশা আবার করা হয়েছে ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট, সুই-সুতার কাজের মাধ্যমে। পোশাকের কাটেও রয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া। লাল-সবুজের শাড়ি, পাঞ্জাবি, কুর্তি, উত্তরীয়সহ নানা রকম পোশাকে মানিয়ে যাবে ছোট থেকে বৃদ্ধ সবাই। এ ছাড়া পরিবারের সবার জন্য রয়েছে কম্ব সেট।
তবে এটা ঠিক, বিজয় দিবসে আপনার পোশাক কেমন হবে তা ভেবে নেওয়ার অপার স্বাধীনতা আপনার আছে। পছন্দের রঙের কম্বিনেশনে নিজের পোশাক পরতে পারেন। আর পোশাক বাছার বেলায় বলে রাখা ভালো, ঋতুভেদে আরামের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিন।