সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন থামছেই না। এমন অবস্থায় নদীপাড়ের গ্রামগুলো রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রভাবশালী একটি চক্র বালু উত্তোলন করছে। তাঁদের দাবি, নদী রক্ষায় দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধ করা হোক।
এদিকে ১১ মার্চ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় একটি চক্রকে। এর পরেও থেমে নেই বালু উত্তোলন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মির্জাকান্দা গ্রামের প্রভাবশালী কাজল মিয়া ও আহাদ নুর কুশিয়ারা নদী থেকে বালু তুলছেন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে তাঁরা বালু উত্তোলন করছেন। স্থানীয় লোকজনের দাবি, দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হোক।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সারা বছরই নদী থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। উপজেলার প্রতাপপুর, মেধা বাজার, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ১০০ একর পুকুর, ভেড়াডহর গ্রামে ভাঙন দেখা দেওয়ায় নদীতে বিলীন হয়ে যায় কৃষিজমি ও বসতভিটা। ভাঙনে ২০০ পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে বর্তমানে খাসজমিতে বসবাস করছে।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বাধা দিলে বা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলে অভিযোগকারী ব্যক্তিরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হন। তাই অনেকে অভিযোগ করতে চান না। বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কোনো কার্যকর তৎপরতা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মেধা বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, কাজল মিয়া এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। প্রভাব খাটিয়ে তিনি অবৈধভাবে বালু তুলছেন। এতে মেধা বাজার ভাঙনের কবলে রয়েছে।
এই ব্যবসায়ী আরও জানান, প্রশাসনের যোগসাজশে কাজল ও আহাদ নুর দীর্ঘদিন ধরে বালু তুলছেন।
অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, অবৈধভাবে বালু তোলার দায়ে ১১ মার্চ তিনজনকে আটক করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপরও বালু উত্তোলন থেমে নেই। তবে বালু উত্তোলনকারী ব্যক্তিরা যতই প্রভাবশালী হোক, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভেড়াডহর গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘প্রশাসনের লোকজন আইলে এরা কাজ বন্ধ কইরা দেয়। চইলা গেলে আবার শুরু করে। তারা প্রশাসনের লোকজনের যোগসাজশে এসব কাজ করে। তাদের সুবিধার্থে আমাদের বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হচ্ছে। এগুলো দেখার কেউ নেই।’
বালু তোলার অভিযোগ সম্পর্কে কাজল মিয়া বলেন, ‘ভাড়া করে ড্রেজার মেশিন নিয়ে দুদিন বালু তুলেছি। মেশিন ফেরত পাঠিয়েছি। এখন বালু তোলা বন্ধ।’
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীরা যতই প্রভাবশালী হোক, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেব।’