টাঙ্গাইলে এবার সরিষার আবাদ বেড়েছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ভালো ফলনের আশা করছেন চাষিরা। তবে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে ফসলের ক্ষতি করছেন দর্শনার্থীরা–এমন অভিযোগ বিভিন্ন এলাকার চাষিদের। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। খেত রক্ষায় রীতিমতো সাইনবোর্ড টাঙিয়েছেন অনেকে।
সরেজমিনে সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, সরিষার ফুলে বর্ণিল সাজে সেজেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। দৃষ্টিজুড়ে শুধু হলুদের সমারোহ। খেতে বসছে পোকাখাদক বুলবুলি ও শালিকের ঝাঁক। পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা। আর এই সৌন্দর্যের টানে আশপাশ ও দূর-দূরান্ত থেকে বেড়াতে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। আবার প্রাকৃতিক এই সৌন্দর্য ধরে রাখতে তরুণ-তরুণীরা ছবি তুলছেন কিংবা ভিডিও ধারণ করে রাখছেন। এ সময় তাঁরা নিজের অজান্তেই খেত মাড়িয়ে ক্ষতিসাধন করছেন বলে অভিযোগ চাষিদের। এই অতি উৎসাহী দর্শনার্থীদের থামাতে খেতের পাশে লাগানো হয়েছে সাইনবোর্ড। অনেকে সেই সাইনবোর্ডের পাশে দাঁড়িয়েই তুলছেন ছবি।
সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের সরিষাচাষি মো. আলাল হোসেন মোল্লা বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছি। তবে আমার সরিষাখেত রাস্তার পাশে হওয়ায় অনেক মানুষ বেড়াতে আসেন। তাঁরা খেতের ভেতরে গিয়ে ছবি তোলেন। এতে তাঁদের পায়ের পাড়ায় অনেক গাছ নষ্ট হয়ে যায়। না করলেও শোনে না।’
সরিষাচাষি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘সরিষাগাছে ফুল আসার পর থেকেই ঘুরতে আসছেন মানুষ। তাঁরা সরিষা ফুলের সঙ্গে ছবি তুলতে খেতের ভেতরে প্রবেশ করছেন। এ সময় তাঁদের পায়ের চাপায় সরিষাগাছ নষ্ট হয়। আমরা না করলেও শোনেন না। পরে সাইনবোর্ড টাঙিয়েছি। তাতেও কাজ হচ্ছে না।’
কথা হয় আরেক চাষি সুরুজ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঘুরতে এসে আমাদের খেত নষ্ট করছে, নিষেধ করলে উল্টো বলে, “যাওয়ার সময় ক্ষতির টাকা দিয়ে যাব।” কতক্ষণ আর খেত পাহারা দিয়ে রাখা যায়। আমি খুব বিরক্ত অনেক দর্শনার্থীর ওপর।’
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এ বছর সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৫ হাজার ৭০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৫০ হাজার ৪৮৮ হেক্টর জমিতে।