বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। অথচ দখলে-দূষণে আজ নদীগুলো মৃতপ্রায়। ভাষা এবং স্বাধীনতার জন্য যেমন আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে, তেমনি নদী ও পরিবেশ বাঁচাতে লড়াই করার সময় এসেছে। কারণ, উন্নয়ন দিয়ে নদী বানানো সম্ভব নয়, কিন্তু নদীর মাধ্যমে সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব।
গতকাল বছিলায় বুড়িগঙ্গার পাড়ে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ আয়োজিত নদী উৎসবে বক্তারা এসব কথা বলেন।
উৎসবের প্রধান অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, বুড়িগঙ্গায় আগে জাল ফেললে মাছ উঠত। এখন প্লাস্টিক আর দূষণের জঞ্জাল ওঠে। আজকে খাল-নদী-ড্রেন দখল হয়ে যাচ্ছে।
আবাসন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে মেয়র তাঁদের উদ্দেশে বলেন, ঠিক হয়ে যান, আর প্রহসন করবেন না।
সভাপতির বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, ‘নদী বাঁচানো মানে নিজেকেই বাঁচানো। সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চাই না। অংশগ্রহণ করতে চাই, অংশীদারত্ব চাই।’
ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান বলেন, ‘নদীবিষয়ক মাস্টারপ্ল্যান যাতে প্রকল্পভিত্তিক না হয়। লন্ডনের টেমস নদীকে বাঁচাতে ৫৫ বছর লেগেছে। আমরা চেষ্টা করলে আমাদের বুড়িগঙ্গাকেও বাঁচাতে পারব।’
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ‘বুড়িগঙ্গা উৎসবের কথা: একটি জীবন্ত সত্তা’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন বেলার নির্বাহী প্রধান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ডিএনসিসির কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ প্রমুখ।
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে বুড়িগঙ্গার গল্প শীর্ষক বিশেষ অধিবেশনে আলোচনায় অংশ নেন স্থানীয় বাসিন্দা, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীরা। সমাপনী অধিবেশনে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম। এ সময় নৌকাবাইচ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।