আজকের পত্রিকা ডেস্ক
বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে চলছে ২৬তম জলবায়ু সম্মেলন বা কপ২৬। আগের দুই দিন বিশ্বের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিজেদের প্রতিশ্রুতি ও উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার মূলত জলবায়ু তহবিল ও বিভিন্ন আর্থিক দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বিশ্বের শীর্ষ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-জিরো বা কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে এবং পরিবেশ থেকে কার্বন শুষে নিয়ে জলবায়ুতে ভারসাম্য তৈরি করতে সম্মত হয়েছে। ‘গ্লাসগো ফাইন্যান্সিয়াল অ্যালায়েন্স ফর নেট জিরো’ বা জিএফএএনজেড নামের এ জোটটির সম্পদের পরিমাণ ১৩০ লাখ কোটি ডলার, যা বিশ্বের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট সম্পদের প্রায় ৪০ শতাংশ। বিশ্বের ৪৫টি দেশের ৪৫০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এ জোটটিতে আরও প্রতিষ্ঠান যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নেট-জিরো লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড ফাউন্ডেশন’ বা আইএফআরএফ ফাউন্ডেশনও আর্থিক মার্কেট টেকসই করতে রূপরেখা ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো যুক্তরাজ্যও ‘গ্রিন বন্ডের’ প্রস্তাব করেছে। এ জন্য নতুন পুঁজিবার তৈরি করতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন।
‘গ্রিন বন্ড’ চালুর ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে আগামী পাঁচ বছরে জাতিসংঘে ১৩ কোটি ৬১৯ লাখ ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক। তিনি কপ২৬কে সর্বজনীন কল্যাণের বদলে ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহার করছে বলে সমালোচনা করেছেন কয়েকজন বিশ্লেষক। পরিবেশ বিষয়ক এনজিও ‘গ্রিনপিস’ যুক্তরাজ্যের উপদেষ্টা চার্লি ক্রনিক বলেন, ‘আর্থিক খাতকে রূপান্তর করাই এবারের সম্মেলনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু অর্থমন্ত্রী (সুনক) বিষয়টি ‘মার্কেটিং স্লোগানে’ পরিণত করেছেন। আমাদের দরকার সুনির্দিষ্ট কর্মপন্থা।’
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে গরিব দেশগুলোর জন্য ২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর ১০ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার ঘোষণা দেয় ধনী দেশগুলো। কিন্তু অঙ্গীকারের ১২ বছর পার হয়ে গেলেও এ ‘জলবায়ু তহবিল’ সংগ্রহ করতে পারেনি ধনী দেশগুলো। বরং ২০২৩ সাল পর্যন্ত তা বিলম্ব হতে পারে বলে সম্প্রতি শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় অন্তত ২০২২ সালের মধ্যে এ তহবিল বাস্তবায়ন করতে আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন জলবায়ু দূত জন কেরি।
তহবিল সংগ্রহসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার বিভিন্ন আর্থিক ঝুঁকি ও সমাধান নিয়ে গতকাল জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের দ্বিবার্ষিক আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সে বিষয়ে কোনো খবর পাওয়া যায়নি।