মাছ শিকারিরা জানান, উপজেলার সুতকর্মাপাড়া, মোল্লাপাড়া, শান্তিপুর, চৌধুরীপাড়া, তালুকদার পাড়া, পোড়াবাড়ি, ফাতেমানগর, জিয়ানগরসহ বিভিন্ন গ্রামের কয়েক শ মানুষ গত বুধ ও বৃহস্পতিবার মাছ ধরেছে। এতে ট্যাংরা, গুইল্যা, টাকি, তেলাপিয়া, মাগুর, কার্প, নলা, মলা, পুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পানছড়িতে অনেক পাহাড়ি ছড়া রয়েছে। এ ছাড়া পাহাড়ের নিচে বাঁধ দিয়েও মাছ চাষ হয়। অসংখ্য পুকুরের পাশাপাশি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি অনেক ছড়ায় মিঠাপানি প্রবাহিত হওয়ায় মাছের প্রজনন ভালো হয়। রাবার ড্যাম কর্তৃপক্ষ বাঁধ দিলে চেঙ্গী নদীর পানি ছড়ার মুখে ঢুকে মাছের প্রজনন বৃদ্ধি করে। পরে সেখানে চিংড়ি, মলা, পুঁটি, গুইল্যা, ট্যাংরা, শিং, মাগুর, কাঁকড়া ও কুঁইচা পাওয়া যায়।
উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বকুল চন্দ্র চাকমা বলেন, চেঙ্গী নদীতে সারা বছর তেমন পানি থাকে না। বর্ষায় কাপ্তাই বাঁধের পানি ওপরে উঠে আসে। তখন বড় মাছের সঙ্গে ছোট পোনা মাছ উজানে চলে আসে। বর্ষা শেষে নদীতে হাঁটুপানিরও কম থাকায় মাছও তেমন একটা থাকে না। শীতকালে পানছড়ি রাবার ড্যাম ফোলানো হলে নদীর পানি জমে ভরে যায়। তখন ছোট মাছগুলো ৩-৪ মাসে আটকানো পানিতে বেশ বড় হয়।
মনোয়ারা বেগম, সবুজ চাকমা, চির কুমার চাকমা, জহির হোসেনসহ কয়েকজন জানান, প্রতিবছর বৃষ্টির শুরুতে রাবার ড্যামের জমানো পানি ছেড়ে দিলে তাঁরা মাছ ধরার উৎসবে মেতে ওঠেন। এ বছর বৃষ্টি না থাকায় এত দিন পানি আটকানো ছিল। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় পানি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাই সবাই মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠেছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রিয় কান্তি চাকমা বলেন, পাহাড়ি ছড়ার পানি মিষ্টি। তাই এই এলাকায় মাছ পাওয়া যায়। তবে পাহাড়ি নদীতে সারা বছর পানি থাকে না। শুধু রাবার ড্যাম বাঁধের ফলে ৩-৪ মাস আটকানো পানিতে মাছের উৎপাদন বাড়ে। পানি ছেড়ে দিলে দু-এক দিন মাছ ধরার আনন্দে সবাই অপেক্ষায় থাকে।
মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, কৃষিজমিতে সার ও কীটনাশক বিষ প্রয়োগ, পানি কম হওয়াসহ নানা কারণে মাছের পরিমাণ কমে গেছে। মাছের প্রজনন বৃদ্ধিসহ মাছ রক্ষায় অভয়াশ্রম নির্মাণ জরুরি। পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মাছ রক্ষা করা হবে।