লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির তোড়ে ১০ কিলোমিটার পাকা ও ২০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি সেতু-কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়েছে। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে বেড়িবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারে ৩৫৮টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। প্লাবিত হয়েছে ঘরবাড়িসহ প্রায় ১ হাজার ২০০ একর ফসলি জমি। এ ছাড়া অসংখ্য গাছপালা ভেঙেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, কৃষি ও মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বড়খেরী, চর গাজী, চর রমিজ, চর আলগী ও চর আবদুল্যা ইউনিয়নে। এসব ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। কয়েক শ একর ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় ফসলি জমি। অস্বাভাবিক জোয়ারে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ৩১ হেক্টর আয়তনের ৩৫৮ পুকুরের দেশীয় প্রজাতির প্রায় ৭৭ টন মাছ ভেসে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ১৭ কিলোমিটার রামগতি-আলেকজান্ডার আঞ্চলিক সড়কের বেহাল। যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, হাঁটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। সড়কগুলোর মধ্যে মুন্সির হাট রোড, বিবির হাট রোড, রশিদিয়া রোড ও মধ্য চর আলগী রোড বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়ক ও সেতু-কালভার্ট দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক, মোটরসাইকেলচালক ও পথচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল বিকল হওয়াসহ দুর্ঘটনা ঘটছে। রামগতি বাজার থেকে সদর আলেকজান্ডারে যেতে আগে আধা ঘণ্টা সময় লাগত, বর্তমানে বহুপথ ঘুরে এক ঘণ্টায়ও যাওয়া যায় না।
স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এবং সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড়ে পাকা সড়কগুলোয় বড় বড় গর্ত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং ও খোয়া ওঠে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রামগতি-আলেকজান্ডারে যাওয়ার যে কয়েকটি সড়ক রয়েছে তার সবই বেহাল। ফলে উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের উপজেলা সদর বা জেলা শহরে যেতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এ সুযোগে সিএনজিচালকেরাও ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছেন।
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পাকা সড়কগুলো এবং কয়েকটি সেতু-কালভার্ট জরুরিভিত্তিতে সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু-কালভার্ট ও সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করতে
বলা হয়েছে।