তেরখাদা উপজেলার বারাসাত ইউনিয়নে উত্তর খুলনা এস এম এ মজিদ স্মারক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মচারী (এমএলএসএস) নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আগের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী থাকার পরও নতুন করে একই পদে দরখাস্ত আহ্বান করার অভিযোগে তেরখাদা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী।
এর আগেও স্কুল প্রধানের বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও বিদ্যালয়ের আর্থিক বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। একের পর এক এ ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটলেও প্রতিকার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। তবে সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, যশোরের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব অভিযোগের তদন্ত করার জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ৬ মার্চ তেরখাদা সিনিয়র সহকারী জজ আদালত খুলনায় মামলা করেছেন বিদ্যালয়টির এমএলএসএস মো. শামিম ফকির। মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের ২৪ অক্টোবর জারি করা নীতিমালা অনুযায়ী ২০১৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে ওই বছরের ১৪ মে মো. শামিম ফকিরকে এমএলএসএস পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আবার গত ৩ ফেব্রুয়ারি পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এমএলএসএস পদে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে। ফলে এমএলএসএস পদটি স্পষ্টকরণের লক্ষ্যে আদালতে মামলা করেছেন মো. শামিম ফকির। এ ছাড়া গত ২০ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উত্তর খুলনা এসএম এ মজিদ স্মারক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে গঠিত চলমান ম্যানেজিং কমিটি বাতিলকরণ ও বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি এক যুগ ধরে ছয়বার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিযোগে জানা যায়, এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চৌধুরী পাপিয়া তার স্বামী এসএম খবিরুল ইসলাম খসরুকে ২০১০ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ছয়বার সভাপতি ও একবার অ্যাডহক কমিটির সভাপতি করেছেন।
সহকারী শিক্ষক মুঞ্জিলা খাতুন ও লক্ষ্মী রানির নাম সাধারণ শিক্ষক শ্রেণি ও সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক শ্রেণির ভোটার তালিকা উভয় জায়গায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অন্তর্ভুক্ত করে রেখেছেন। ২০১৭ সালে ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্যরা ও গ্রামবাসীরা মিলে সভাপতি এসএম খবিরুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক পাপিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক বরাবর দাখিল করেও কোন সুরাহা হয়নি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক চৌধুরী পাপিয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ম্যানেজিং কমিটি গঠনে ভোটের মাধ্যমে সবকিছু নিয়মতান্ত্রিকভাবে হয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার খো. রুহুল আমিন বলেন, তদন্তের চিঠি পেয়েছি, দ্রুতই এসব অভিযোগ তদন্ত করা হবে।