বৃষ্টি প্রচণ্ড দাবদাহ থেকে স্বস্তি দিলেও বৃষ্টির পানি যে ত্বক ও চুলের জন্য খুব একটা ভালো নয়, এ কথা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। ফলে ত্বক ও চুলের অনেক সমস্যা দেখা দেয় বর্ষাকালে। তাই বৃষ্টির পানি যাতে সৌন্দর্যহানির কারণ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ত্বকের দেখভাল
আমাদের ত্বক যদি সরাসরি বৃষ্টির পানির সংস্পর্শে আসে, তবে খুব সহজেই আক্রান্ত হতে পারে। বর্ষাকালে ত্বকের যেসব ক্ষতি হতে পারে:
- বর্ষাকালে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। গুমোট আবহাওয়া ও আর্দ্রতায় বেশি পরিমাণে ঘাম হওয়ার কারণে ত্বক তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। তার ওপর ধুলো ত্বকে পড়ে লোমকূপ বন্ধ করে দেয়। ফলে ঘাম বেরোনোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রচুর পরিমাণে ব্রণ হয়।
- বর্ষাকালে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হয়। এ সময় মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ প্রচুর পরিমাণে ঘামে। ফলে শরীরে দুর্গন্ধ ও বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ হয়। এ সময় মূলত দূষিত পানির মাধ্যমে দাদ বা অ্যাকজিমার মতো চর্মরোগ হয়।
সতর্কতা
- সংক্রমিত ত্বকে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল পাউডার বা ক্রিম ব্যবহার করে ত্বক শুষ্ক রাখতে হবে। সংক্রমিত জায়গায় হাত লাগানো যাবে না।
- বৃষ্টিতে ভেজা এড়িয়ে চলতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল থাকে, তাই তাদের বেশি সচেতন থাকতে হবে। কোনো কারণে বৃষ্টিতে ভিজে গেলে দ্রুত কাপড় বদলে নিতে হবে।
- বর্ষাকালে ফ্লিপ ফ্লপ বা স্লিপার-জাতীয় স্যান্ডেল পরতে হবে। এটা পা শুকনো রাখে ও সংক্রমণের আশঙ্কা কমায়।
- কাপড়চোপড় সব সময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে হবে। এ সময় কাপড়ে ফাঙ্গাস ধরে ও ত্বকের ক্ষতি করে।
চুলের সমস্যা
বর্ষাকালে ত্বকের মতোই চুলেরও অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে বৃষ্টির পানির কারণে। যেমন:
- বর্ষাকালে চুল নিস্তেজ হয়ে উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে।
- চুল ঠিকমতো না শুকানোর ফলে এ সময় প্রচুর চুল পড়ে।
- মাথার ত্বকে খুশকি হয় ও মাথা চুলকায়।
- চুল চিটচিটে ও আঠালো হয়।
সতর্কতা
- বৃষ্টির পানি অ্যাসিডিক। তাই বৃষ্টির পানি এড়িয়ে চলুন এবং চুল শুকনো রাখুন।
- চুলের চিটচিটে ও আঠালো ভাব দূর করার জন্য নিয়মিত শ্যাম্পু করতে হবে। এতে মাথার ত্বক পরিষ্কার থাকবে। শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
- খুশকির সমস্যা দূর করতে গোসলের দুই ঘণ্টা আগে মাথায় তেল ম্যাসাজ করে নিতে হবে।
- চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে শ্যাম্পু করার পরে অ্যাপল সিডার ভিনেগার মেশানো পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিলে তা উজ্জ্বল থাকে। এ ছাড়া অ্যালোভেরা জেল চুলে দিলেও চুল নরম ও উজ্জ্বল হয়। চুলের গোড়া শক্ত করতে সপ্তাহে এক দিন গোসলের ৪৫ মিনিট আগে মেথি ও আমলকীর মিশ্রণ ব্যবহার করা যেতে পারে।
- চুল পড়া কমাতে ভেজা চুল বাঁধা বা আঁচড়ানো যাবে না। ভেজা চুল বেঁধে রাখলে বা আঁচড়ালে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে চুল পড়া বেড়ে যায়। চুল শুকানোর পর চুল আঁচড়াতে হবে।
- চুল স্বাস্থ্যকর রাখার জন্য প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে।
সূত্র: ফেমিনা