ঢাকার নবাবগঞ্জে গরু দৌড় ও সাধু মেলার আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের শোল্লা স্কুল মাঠে এ গরু দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
শোল্লা মিলেনিয়াম ক্লাবের আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী গরুর রশি ছেঁড়া প্রতিযোগিতা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অন্তত ২০ হাজার দর্শনার্থী সমবেত হন।
বিকেল ৩টা থেকে নানা বয়সী মানুষ দলে দলে গরুর রশি ছেঁড়া দেখতে আসেন। মুহূর্তে মাঠের চারপাশ ভরে ওঠে। অনুষ্ঠানস্থলকে ঘিরে বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যবাহী গ্রাম্য মেলা বসে।
শোল্লা মিলেনিয়াম ক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক মনির হোসেন বলেন, ‘শতবর্ষী এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আমাদের এই আয়োজন। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ তাঁদের গরু নিয়ে আসছেন প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করতে। এটাও আমাদের সার্থকতা।’
ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রায়হান আহমেদ জানান, প্রতিবছরই মেলা উপলক্ষে অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে থেকে আশপাশের বাড়িগুলোতে অতিথিদের আগমন দেখা যায়। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে প্রায় এক সপ্তাহ ঘরে ঘরে চলে উৎসবমুখর পরিবেশ। সেই সঙ্গে তাঁদের আপ্যায়নের জন্য রকমারি পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়।
বিকেলে দরবেশ মাদবরের গরু প্রথম, চুন্নু মিয়ার গরু দ্বিতীয় ও শামসুল হকের গরু তৃতীয় স্থান অধিকার করে। তাঁদের বিশালাকার গরু সারাক্ষণ মাঠজুড়ে দাপিয়ে বেড়ায়। দূরদূরান্তের দর্শকদের আত্মার তৃপ্তি জোগায়।
দোহার ও নবাবগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় অর্ধশত গরু নিয়ে আসা যুবকেরা মাঠ জুড়ে ছোটাছুটি করেন। তবে গরু দৌড়ের পাশাপাশি বিগত ৩ বছর ধরে ঘোড়া দৌড়ের প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হচ্ছে। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
গরু দৌড় দেখতে এসে নবাবগঞ্জের জালালপুরের বাসিন্দা শফিউদ্দিন বলেন, ‘ইতিহাস ঐতিহ্য প্রতিটি জাতির অস্তিত্ব। গ্রাম বাংলার মানুষের চিরচেনা সংস্কৃতি বিলুপ্তপ্রায়। এ গরু রশি ছেঁড়া প্রতিযোগিতা, ইতিহাসের পুরোনো দিনের কথা মনে করিয়ে দেয়।’
নিখিল চন্দ্র মণ্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শোল্লার ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ভূঁইয়া কিসমত, উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা সফিল উদ্দিন মিয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা দিলীপ কুমার মণ্ডল প্রমুখ।